পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जमॉख $46. বংশজ ব্রাহ্মণেরাই জাতি লোপ করিয়াছেন তাহার কারণ আমি বিশেষ করিয়া বলি আপনি বিবেচনা করিবেন বংশজ ব্রাহ্মণের কন্যা ক্রয় করিয়া বিবাহ করেন কিন্তু তাহাতে অনেক জাতির কন্যা চলিয়া যায় অধিক কি কহিব কন্যা ক্রয় করিয়া বিবাহকরণ ব্যবহার থাকাতে বংশজ ব্রাহ্মণ মোসলমানের কন্যাপৰ্য্যন্তও বিবাহ করিয়াছেন আমি ইহার কএক প্রমাণ লিখিতেছি । ১ । এক সময়ে কন্যাবিক্রয়ি দুই ব্রাহ্মণ বৰ্দ্ধমান দিয়া আসিতেছিল তাহাতে পথিমধ্যে এক স্বরূপ বালিকাকে দেখিয়া তাহাকে ক্রয়করণার্থ ইচ্ছা প্রকাশ করিলে পরে তাহারদিগের অভিলাষ বুঝিয়া এক জবনী কহিল ব্রাহ্মণঠাকুর এইটি মোসলমানের কন্যা ইহার কেহ নাই শিশুকালাবধি আমি প্রতিপালন করিয়াছি তোমরা মোসলমানের কন্যাকে লইয়া কি করিবা তাহাতে ব্রাহ্মণের কহিল ভাল সে কথা পরে সংপ্রতি তুমি দিবা কি না তাহা বল অনস্তর জবনীকে ছয় টাকা দিয়া কন্যাকে ক্রয় করিল এবং বাজারে আসিয়া একখানি শাড়ী কিনিয়া তাহাকে পরাইয়া লইয়া চলিল কিন্তু পথের মধ্যেই কুমারীকে শিক্ষা দিল কাহার সঙ্গে বাক্যালাপ করিবে না পরে ঐ ধূর্তের সন্ধ্যাকালে এক ব্রাহ্মণের বাটতে গিয়া অতিথি হইল তাহার দুই মাস পূৰ্ব্বে গৃহস্থ ব্রাহ্মণের স্ত্রী বিয়োগ হইয়াছে তাহাতে ব্রাহ্মণ ব্যাকুল ছিলেন সেই শোকের সময়ে দিব্যাঙ্গনা দেখিয়া অতিথির নিকট ঘনাইয়া বসিলেন ঐ ব্রাহ্মণের সম্পত্তিও কিঞ্চিৎ ছিল অতএব বিবাহের প্রস্তাব করিয়া মূল্যের ডাক আরম্ভ হইল বিক্রেতার প্রথমতঃ পাচশত টাকা চাহিল কিন্তু শেষ চারিশত টাকা রফা হইলে তৎক্ষণাৎ টাকাগুলি গণিয়া লইয়৷ সেই রাত্রিতে বিবাহ দিল এবং পরদিবস প্রাতে উঠিয়া তাহার প্রস্থান করিল অনস্তর গৃহী সকল জ্ঞাতি কুটুম্বাদিকে গৃহিণীর পাকান্ন ভোজন করাইয়া এক বৎসরপর্য্যন্ত ঐ স্ত্রীকে লইয়া সুখভোগ করেন তাহার পরে এক দিবস লাউ পাক করিতে ঐ স্ত্রী অভ্যাসপ্রযুক্ত হঠাৎ কহিয়া উঠিল যে “কছু ছে কেয়া ছালান হোগা” এই কথা শুনিয়া ব্রাহ্মণের ভগিনী তাহার মাতাকে ডাকিয়া কহিল “ওমা শুন আসিয়া তোর বে কি বলিতেছে।” তাহার পরে জিজ্ঞাসা করিবাতে জবন কন্যা আপন জাতিকুলের সকল কথাই ভাঙ্গিয়া বলিয়া ফেলিল তাহাজে ব্রাহ্মণ চমৎকার ভাবিয়া স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিলেন । ২। কলিকাতা শহরের সীমাসংযুক্ত পূৰ্ব্বাংশবাসি —মুখোপাধ্যায় এক সাহেবের হিন্দুস্থানীয় উপপত্নী ব্রাহ্মণীর কন্যাকে বিবাহ করেন ঐ কন্যা সাহেবের ঔরসজাত পরে তাহার গর্ভে মুখুয্যের এক কন্যা এবং তাহাকে রাঢ়দেশবাসি এক শুদ্ধাচার বিশিষ্ট পরিনিষ্ঠ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের সঙ্গে বিবাহ দেন ঐ পণ্ডিতের চতুষ্পাঠী কলিকাতাতেই ছিল পরে বিবাহ করিয়া বাটতে গেলেন তিনি ঐ ভাৰ্য্যাকে অনেক বৎসরপর্য্যস্ত সহবাস করিয়াছিলেন এবং তাহার গর্ভে দুই তিনটা সস্তানও জন্মিল পরে টের পাইলেন সাহেবের দৌহিত্রী বিবাহ করিয়াছেন কিন্তু পণ্ডিতের যজমান শিষ্য ও জ্ঞাতি কুটুম্ব অনেক আছেন সাহেবের কন্যার অল্পে সকলের উদর পবিত্র হইয়াছে ।