পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা প্রথম খণ্ড.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০ ভূমিকা ১ সংখ্যা” প্রকাশিত হইল। ইহার মুখপত্র হইতে ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়ে নিম্নাংশ উদ্ধৃত হইয়াছিল – - সমাচার দর্পণের নমস্কার। পাঠক মহাশয়েরদের সমীপে প্রাচীন দর্পণের নামে ও আকারপ্রকারে উপস্থিত হওয়াতে ভরসা করি অনেক পাঠক মহাশয় আমারদিগকে বহুকালীন বৃদ্ধ বন্ধু স্বরূপ দৰ্শন করিয়৷ গ্ৰহণ করিবেন । যখন ১৮৪১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তারিখে দর্পণের আদর্শন হইল তখন পুনরুদয় হওনের প্রত্যাশা ছিল না পরস্তু দেখুন পুনরুথিত হইলাম । এই দর্পণের নাম ও বেশ বৃদ্ধ প্রবণের, সাহস ও শক্তি নবীনের। পূৰ্ব্বকার দর্পণে সাধারণ লোকের অনেক হিত বিষয় প্রতিবিম্বিত হইত। বৰ্ত্তমান দর্পণেও তদনুরূপ হওয়াই বাঞ্ছা ।. দর্পণের দ্বিভাষিত গুণের বিষয়ে এই বক্তব্য । তুই ভাষার বিশেষ বিধ্যমুসারে আমারদের মত প্রকাশ করিতে মনস্থ করিতেছি এই হেতুক কখনই পদের অবিকল অনুবাদ করা হইবেক নী সামান্ততঃ উভয় ভাষার রস যথাসাধ্য রক্ষা করিয়া ভাষান্তরী কৃত হইবেক ...দৰ্পণ, ২১ বৈশাখ । ( 'সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়, ৫ মে ১৮৫১ ) নবপর্য্যায়ের ‘সমাচার দর্পণ দেড় বৎসর চলিয়া একেবারে লুপ্ত হয়। ১ বৈশাখ ১২৬০ ( ১২ এপ্রিল ১৮৫৩ ) তারিখের ‘সংবাদ প্রভাকরে প্রকাশিত “১২৫৯ সালের সাম্বৎসরিক ঘটনার সংক্ষেপ বিবরণ” মধ্যে পাইতেছি – অগ্রহায়ণ ( ১২৫৯ ) - - সমাচার দর্পণ পত্র শ্রীরামপুরে গঙ্গার জলে প্রাণ ত্যাগ করে । প্রথম খণ্ডের বিষয়-বিদ্যাস এই পুস্তকে উদ্ধৃত সংবাদপত্রের বিবরণগুলিতে যে-যুগের পরিচয় পাওয়া যাইবে সেটি বাংলা দেশ ও বাঙালী সমাজের পক্ষে একটি স্মরণীয় যুগ। পঞ্চাশ বৎসরেরও অধিককালব্যাপী ইংরেজ-শাসনের ফলে তখন বাঙালীর জীবনে ও চিন্তাধারায় পাশ্চাত্য প্রভাব প্রবেশ করিতে আরম্ভ করিয়াছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজ্যশাসনে বাঙালী ইহার বহু পূৰ্ব্বেই ইংরেজের সহায়ক হইয়াছিল, কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের পূৰ্ব্বে আমাদের সমাজ বা চিন্তাধারায় ইউরোপের প্রভাব লক্ষিত হয় নাই বলিলেই চলে। ইহার পরেই বাঙালী শুধু ইংরেজের চাকুরীই নয়, চিন্তাধারা এবং শিক্ষাও গ্রহণ করিতে আরম্ভ করিল। তখন হইতে বাঙালী-জীবনে যে-পরিবর্তন দেখা দিয়াছে তাহার শেষ আজিও হয় নাই । ‘সমাচার দর্পণে এই যুগ-পরিবর্তনের প্রথম পৰ্ব্ব স্থম্পষ্টভাবে প্রতিফলিত দেখিতে পাই । বাঙালীর সমাজে এবং চিন্তাধারায় এই নূতন প্রভাবের সূচনা কবে হইল, তাহার কোন একটি বিশেষ তারিখ নির্দেশ করা উচিত নয়, কারণ সে-সূচনা কোন একটি বিশেষ মুহূৰ্ত্তে হঠাৎ দেখা দেয় নাই, ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ করিয়াছিল। তবু দুই-তিনটি ঘটনাকে উহার নির্দেশক বলিয়া গণ্য করিলে বোধ করি অন্যায় হইবে না। উহার একটি রামমোহন