পাতা:সচিত্র রেল অবতার - অনাথবন্ধু সেন.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
রেল অবতার।

 গিন্নি বলিলেন—“ওগো, তুমি ভাবছ কেন? আমি কি লোকটাকে দেখ‍্তে ছেড়েছি। যে সব বাবুরা প্রায়ই আসে, জিনিষপত্র, টাকাকড়ি দিয়ে যায়—তাদের মধ্যে কেউ নয়। এ একটা ছোকরা, বয়স ১৬|১৭, গোঁফ টোফ কিছুই উঠে নাই।”

 কেরাণীবাবু বুঝিতে পারিলেন—বিনোদই এই কার্য্য করিয়াছে। সেই ছেলেটাই টিকিট-কালেক্টারের কাজের জন্য দরখাস্ত করিয়াছে। আর অরি যারা উমেদার—তাদের বয়স বেশী, গোঁফ্, টোফ্, উঠিয়াছে। একটু পরে বলিলেন: —

 “দেখ, ছোঁড়াটা একটু বুদ্ধি খেলিয়ে গেছে। পাঁচটাকা আমি নেবোনা জেনে, সে খোকার হাতে টাকা দিয়ে গেছে। বলে গেছে—টাকাগুলো তার সন্দেশ খাবার জন্যে। মনে করেছে—এ কথা বল্লে, সে যে খোকাকে বড় ভাল বাসে, তাই আমি ধরে নেব—তার টাকাটা ফিরিয়ে দিতে না পেরে চাকরীটা তার করে দিতেই হবে। কিন্তু আমি সে বান্দা নই। এ কাজটার জন্য আমি ৫০৲ টাকা পাবার বেশ আশা করি—আর ইনি দিয়েছেন কিনা পাঁচ টাকা!”

 গিন্নি কোন উত্তর দিলেন না।

 সন্ধ্যার অনেক পরে বিনোদ পুনরায় কেরাণী বাবুর বাসায় গেল। এদিক ওদিক কেহ আছে কিনা দেখিয়া মৃদুস্বরে ডাকিল—“বাবু, বাড়ী আছেন?”

 কথা শুনিয়াই কেরাণীবাবু ক্ষিপ্রপদে বাহিরে আসিলেন। তিনি যেন বিনোদেরই অপেক্ষা করিতে ছিলেন।