পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
সোনার তরী

স্বপ্নে তারে দেখেছে যেন এমনি মনে লয়—
ভুলিয়া গেছে, রয়েছে শুধু অসীম বিস্ময়।
পার্শ্বে যেন বসিয়াছিল, ধরিয়াছিল কর,
এখনো তার পরশে যেন সরস কলেবর।
চমকি মুখ দু হাতে ঢাকে, শরমে টুটে মন,
লজ্জাহীন প্রদীপ কেন নিভে নি সেইখন!
কণ্ঠ হতে ফেলিল হার যেন বিজুলিজ্বালা,
শয়ন-’পরে লুটায়ে প’ড়ে ভাবিল রাজবালা—
‘কে পরালে মালা!’
এমনি ধীরে একটি করে কাটিছে দিন রাতি।
বসস্ত সে বিদায় নিল লইয়া যূথীজাতি।
সঘন মেঘে বরষা আসে, বরষে ঝরঝর্,
কাননে ফুটে নবমালতী কদম্বকেশর।
স্বচ্ছহাসি শরৎ আসে পূর্ণিমামালিকা,
সকল বন আকুল করে শুভ্র শেফালিকা।
আসিল শীত সঙ্গে লয়ে দীর্ঘ দুখনিশা,
শিশির-ঝরা কুন্দফুলে হাসিয়া কাঁদে দিশা।
ফাগুন-মাস আবার এল বহিয়া ফুলডালা,
জানালা-পাশে একেলা বসে ভাবিছে রাজবালা—
‘কে পরালে মালা!’

শান্তিনিকেতন
১৫ জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯


হিং টিং ছট্

স্বপ্নমঙ্গল

স্বপ্ন দেখেছেন রাত্রে হবুচন্দ্র ভূপ—
অর্থ তার ভাবি ভাবি গবুচন্দ্র চুপ।
শিয়রে বসিয়া যেন তিনটে বাঁদরে
উকুন বাছিতেছিল পরম আদরে,