চেয়ে আছি তোমা-পানে; তুমি সিন্ধু প্রকাণ্ড হাসিয়ে
টানিয়া নিতেছ যেন মহাবেগে কী নাড়ীর টানে
আমার এ মর্মখানি তোমার তরঙ্গ-মাঝখানে
কোলের শিশুর মতো।
হে জলধি, বুঝিবে কি তুমি
আমার মানবভাষা? জান কি?—তোমার ধরাভূমি
পীড়ায় পীড়িত আজি ফিরিতেছে এ পাশ— ও পাশ;
চক্ষে বহে অশ্রুধারা, ঘন ঘন বহে উষ্ণশ্বাস;
নাহি জানে কী যে চায়, নাহি জানে কিসে ঘুচে তৃষা—
আপনার মনোমাঝে আপনি সে হারায়েছে দিশা
বিকারের মরীচিকাজালে। অতল গম্ভীর তব
অন্তর হইতে কহো সান্ত্বনার বাক্য অভিনব
আষাঢ়ের জলদমন্ত্রের মতো। স্নিগ্ধ মাতৃপাণি
চিন্তাতপ্ত ভালে তার তালে তালে বারম্বার হানি
সর্বাঙ্গে সহস্রবার দিয়া তারে স্নেহময় চুমা
বলো তারে ‘শান্তি শান্তি’, বলো তারে ‘ঘুমা, ঘুমা, ঘুমা’।
১৭ চৈত্র ১২৯৯
হৃদয়যমুনা
যদি ভরিয়া লইবে কুম্ভ, এসো ওগো, এসো মোর
তলতল্ ছলছল্ কাঁদিবে গভীর জল
ওই দুটি সুকোমল চরণ ঘিরে।
আজি বর্ষ৷ গাঢ়তম, নিবিড়কুন্তলসম
মেঘ নামিয়াছে মম দুইটি তীরে।