পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিত্রা
২২৯

যে বিশ্ব কোলের ’পরে চিরদিবসের তরে
তুলে নিল তারে
তার মুখে শব্দ নাহি—  প্রশান্ত সে আছে চাহি
ঢাকি আপনারে।

বৃথা তারে প্রশ্ন করি, বৃথা তার পায়ে ধরি,
বৃথা মরি কেঁদে—
খুঁজে ফিরি অশ্রুজলে কোন্ অঞ্চলের তলে
নিয়েছে সে বেঁধে।
ছুটিয়। মৃত্যুর পিছে ফিরে নিতে চাহি মিছে—
সে কি আমাদের?
পলেক বিচ্ছেদে হায় তখনি তো বুঝা যায়
সে যে অনন্তের।

চক্ষের আড়ালে তাই কত ভয় সংখ্যা নাই,
সহস্র ভাবনা।
মুহূর্ত মিলন হলে টেনে নিই বুকে কোলে,
অতৃপ্ত কামনা
পার্শ্বে ব’সে ধরি মুঠি, শব্দমাত্রে কেঁপে উঠি
চাহি চারি ভিতে—
অনন্তের ধনটিরে আপনার বুক চিরে
চাহি লুকাইতে।

হায় রে নির্বোধ নর, কোথা তোর আছে ঘর,
কোথা তোর স্থান!
শুধু তোর ওইটুক অতিশয় ক্ষুদ্র বুক
ভয়ে কম্পমান।
ঊর্ধ্বে ওই দেখ্ চেয়ে সমস্ত আকাশ ছেয়ে
অনন্তের দেশ—