পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১২
কল্পনা

শঙ্কাতরাস লজ্জাশরম চুকিয়ে দিলেম স্তুতিনিন্দে।
ধুলো, সে তোর পায়ের ধুলো, তাই মেখেছি ভক্তবৃন্দে
আশারে কই, ‘ঠাকুরানি, তোমার খেলা অনেক জানি,
যাহার ভাগ্যে সকল ফাঁকি তারেও ফাঁকি দিতে চাস!’
হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস।

মৃত্যু যেদিন বলবে ‘জাগো, প্রভাত হল তোমার রাতি’
নিবিয়ে যাব আমার ঘরের চন্দ্র সূর্য দুটো বাতি।
আমরা দোঁহে ঘেঁষাঘেঁষি চিরদিনের প্রতিবেশী,
বন্ধুভাবে কণ্ঠে সে মোর জড়িয়ে দেবে বাহুপাশ—
বিদায়কালে অদৃষ্টেরে করে যাব পরিহাস।

পতিসর
৭ আষাঢ় ১৩০৫


অশেষ

আবার আহ্বান?
যতকিছু ছিল কাজ সাঙ্গ তো করেছি আজ
দীর্ঘ দিনমান।
জাগায়ে মাধবীবন চলে গেছে বহুক্ষণ
প্রত্যুষ নবীন,
প্রখর পিপাসা হানি পুষ্পের শিশির টানি
গেছে মধ্যদিন,
মাঠের পশ্চিমশেষে অপরাহ্ণ ম্লান হেসে
হল অবসান,
পরপারে উত্তরিতে পা দিয়েছি তরণীতে—
তবুও আহ্বান?