পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথা

বালকের মুখ চাহি
‘গুরুজীর জয়’ কানে-কানে কয়, ‘রে পুত্র, ভয় নাহি!’
নবীন বদনে অভয় কিরণ জ্বলি উঠে উৎসাহি
কিশোরকণ্ঠে কাঁপে সভাতল, বালক উঠিল গাহি
‘গুরুজীর জয়, কিছু নাহি ভয়’ বন্দার মুখ চাহি।

বন্দা তখন বামবাহুপাশ জড়াইল তার গলে,
দক্ষিণকরে ছেলের বক্ষে ছুরি বসাইল বলে—
‘গুরুজীর জয়’ কহিয়া বালক লুটালো ধরণীতলে।

সভা হল নিস্তব্ধ।
বন্দার দেহ ছিঁড়িল ঘাতক সাঁড়াশি করিয়া দগ্ধ।
স্থির হয়ে বীর মরিল, না করি’ একটি কাতর শব্দ।
দর্শকজন মুদিল নয়ন, সভা হল নিস্তব্ধ।

 ৩০ আশ্বিন ১৩০৬


হোরিখেলা

রাজস্থান

পত্র দিল পাঠান কেসর খাঁরে
কেতুন হতে ভূনাগ রাজার রানী,
‘লড়াই করি আশ মিটেছে মিঞা?
বসন্ত যায় চোখের উপর দিয়া,
এসো তোমার পাঠান সৈন্য নিয়া—
হোরি খেলব আমরা রাজপুতানি।’
যুদ্ধে হারি কোটা শহর ছাড়ি
কেতুন হতে পত্র দিল রানী।

পত্র পড়ি কেসর উঠে হাসি,
মনের সুখে গোঁফে দিল চাড়া।