পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাহিনী
৩৮৫

গান্ধারী। সৌভাগ্যের দিনমণি 
দুঃখরাত্রি-অবসানে দ্বিগুণ উজ্জ্বল
উদিবে হে বৎসগণ। বায়ু হতে বল,
সূর্য হতে তেজ, পৃথ্বী হতে ধৈর্যক্ষমা
করো লাভ, দুঃখব্রত পুত্র মোর। রমা
দৈন্য-মাঝে গুপ্ত থাকি দীন ছদ্মরূপে
ফিরুন পশ্চাতে তব; সদা চুপে চুপে
দুঃখ হতে তোমা-তরে করুন সঞ্চয়
অক্ষয় সম্পদ। নিত্য হউক নির্ভয়
নির্বাসনবাস। বিনা পাপে দুঃখভোগ
অন্তরে জ্বলন্ত তেজ করুক সংযোগ—
বহ্নিশিখাদগ্ধ দীপ্ত সুবর্ণের প্রায়।
সেই মহাদুঃখ হবে মহৎ সহায়
তোমাদের। সেই দুঃখে রহিবেন ঋণী
ধর্মরাজ বিধি; যবে শুধিবেন তিনি
নিজহস্তে আত্মঋণ তখন জগতে
দেব নর কে দাঁড়াবে তোমাদের পথে!
মোর পুত্র করিয়াছে যত অপরাধ
খণ্ডন করুক সব মোর আশীর্বাদ,
পুত্রাধিক পুত্রগণ। অন্যায় পীড়ন
গভীর কল্যাণসিন্ধু করুক মন্থন।

দ্রৌপদীকে আলিঙ্গনপূর্বক

ভূলুণ্ঠিতা স্বর্ণলতা, হে বৎসে আমার,
হে আমার রাহুগ্রস্ত শশী, একবার
তোলো শির, বাক্য মোর করো অবধান।
যে তোমারে অবমানে তারি অপমান
জগতে রহিবে নিত্য— কলঙ্ক অক্ষয়।
তব অপমানরাশি বিশ্বজগন্ময়