পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্ষণিকা
৪২১

নয়নে আমার সজল মেঘের নীল অঞ্জন লেগেছে, নয়নে
লেগেছে।
নব তৃণদলে ঘন বনছায়ে
হরষ আমার দিয়েছি বিছায়ে,
পুলকিত নীপনিকুঞ্জে আজি বিকশিত প্রাণ জেগেছে।
নয়নে সজল স্নিগ্ধ মেঘের নীল অঞ্জন লেগেছে।

ওগো, প্রাসাদের শিখরে আজিকে কে দিয়েছে কেশ এলায়ে, কবরী
এলায়ে?
ওগো, নবঘন-নীলবাসখানি
বুকের উপরে কে লয়েছে টানি,
তড়িৎশিখার চকিত আলোকে ওগো কে ফিরিছে খেলায়ে?
ওগো, প্রাসাদের শিখরে আজিকে কে দিয়েছে কেশ এলায়ে?

ওগো, নদীকূলে তীরতৃণতলে কে ব’সে অমল বসনে, শামল
বসনে?
সুদূর গগনে কাহারে সে চায়,
ঘাট ছেড়ে ঘট কোথা ভেসে যায়,
নবমালতীর কচি দলগুলি আনমনে কাটে দশনে।
ওগো, নদীকূলে তীরতৃণতলে কে ব’সে শ্যামল বসনে?

ওগো, নির্জনে বকুলশাখায় দোলায় কে আজি দুলিছে, দোদুল
দুলিছে?
ঝরকে ঝরকে ঝরিছে বকুল,
আঁচল আকাশে হতেছে আকুল,
উড়িয়া অলক ঢাকিছে পলক, কবরী খসিয়া খুলিছে।
ওগো, নির্জনে বকুলশাখায় দোলায় কে আজি দুলিছে?

বিকচকেতকী তটভূমি-’পরে কে বেঁধেছে তার তরণী, তরুণ
তরণী?