পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩৮
নৈবেদ্য

অজ্ঞাতে

তখন করি নি নাথ, কোনো আয়োজন।
বিশ্বের সবার সাথে, হে বিশ্বরাজন,
অজ্ঞাতে আসিতে হাসি আমার অন্তরে
কত শুভদিনে; কত মুহূর্তের ’পরে
অসীমের চিহ্ন লিখে গেছ! লই তুলি
তোমার স্বাক্ষর-আঁকা সেই ক্ষণগুলি—
দেখি তারা স্মৃতি-মাঝে আছিল ছড়ায়ে
কত-না ধূলির সাথে, আছিল জড়ায়ে
ক্ষণিকের কত তুচ্ছ সুখদুঃখ ঘিরে।

হে নাথ, অবজ্ঞা করি যাও নাই ফিরে
আমার সে ধুলাস্তূপ খেলাঘর দেখে।
খেলা-মাঝে শুনিতে পেয়েছি থেকে থেকে
যে চরণধ্বনি, আজ শুনি তাই বাজে
জগৎসংগীত-সাথে চন্দ্রসূর্য-মাঝে।


অপরাহ্ণে

প্রভাতে যখন শঙ্খ উঠেছিল বাজি
তোমার প্রাঙ্গণতলে, ভরি লয়ে সাজি
চলেছিল নরনারী তেয়াগিয়া ঘর
নবীনশিশিরসিক্ত গুঞ্জনমুখর
স্নিগ্ধ বনপথ দিয়ে। আমি অন্যমনে
সঘনপল্লবপুঞ্জ ছায়াকুঞ্জবনে
ছিনু শুয়ে তৃণাস্তীর্ণ তরঙ্গিণীতীরে
বিহঙ্গের কলগীতে, সুমন্দ সমীরে।

আমি যাই নাই দেব, তোমার পূজায়—