পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গীতাঞ্জলি
৫০৩

বেলাশেষে

আর নাই রে বেলা, নামল ছায়া ধরণীতে,
এখন চল্ রে ঘাটে কলসখানি ভরে নিতে।
জলধারার কলস্বরে সন্ধ্যাগগন আকুল করে—
ওরে, ডাকে আমায় পথের ’পরে সেই ধ্বনিতে।

এখন বিজন পথে করে না কেউ আসা-যাওয়া।
ওরে, প্রেম-নদীতে উঠেছে ঢেউ—উতল হাওয়া।
জানি নে আর ফিরব কিনা, কার সাথে আজ হবে চিনা—
ঘাটে সেই অজানা বাজায় বীণা তরণীতে।
চল্‌ রে ঘাটে কলসখানি ভরে নিতে।

১৩ ভাদ্র ১৩১৬ 


অরূপরতন

রূপ-সাগরে ডুব দিয়েছি অরূপ-রতন আশা করি;
ঘাটে ঘাটে ঘুরব না আর ভাসিয়ে আমার জীর্ণ তরী।
সময় যেন হয় রে এবার ঢেউ-খাওয়া সব চুকিয়ে দেবার,
সুধায় এবার তলিয়ে গিয়ে অমর হয়ে রব মরি।

যে গান কানে যায় না শোনা সে গান যেথায় নিত্য বাজে
প্রাণের বীণা নিয়ে যাব সেই অতলের সভা-মাঝে।
চিরদিনের সুরটি বেঁধে শেষ গানে তার কান্না কেঁদে
নীরব যিনি তাঁহার পায়ে নীরব বীণা দিব ধরি।
রূপ-সাগরে ডুব দিয়েছি অরূপ-রতন আশা করি।

শান্তিনিকেতন
১২ পৌষ ১৩১৬


স্বপ্নে

সুন্দর, তুমি এসেছিলে আজ প্রাতে
অরুণবরন পারিজাত লয়ে হাতে।