পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০৪
গীতাঞ্জলি

নিদ্রিত পুরী, পথিক ছিল না পথে,
একা চলি গেলে তোমার সোনার রথে—
বারেক থামিয়া, মোর বাতায়ন-পানে
চেয়েছিলে তব করুণ নয়নপাতে।

স্বপন আমার ভরেছিল কোন্ গন্ধে,
ঘরের আঁধার কেঁপেছিল কী আনন্দে,
ধুলায়-লুটানো নীরব আমার বীণা
বেজে উঠেছিল অনাহত কী আঘাতে।

কতবার আমি ভেবেছিনু, ‘উঠি উঠি,
আলস ত্যজিয়া পথে বাহিরাই ছুটি।’
উঠিনু যখন তখন গিয়েছ চলে—
দেখা বুঝি আর হল না তোমার সাথে।

তিনধরিয়া
১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৩১৭


সহযাত্রী

কথা ছিল এক তরীতে কেবল তুমি আমি
যাব অকারণে ভেসে কেবল ভেসে,
ত্রিভুবনে জানবে না কেউ আমরা তীর্থগামী
কোথায় যেতেছি কোন্ দেশে সে কোন্ দেশে।
কূলহারা সেই সমুদ্র-মাঝখানে
শোনাব গান একলা তোমার কানে,
ঢেউয়ের মতন ভাষা-বাঁধন-হারা
আমার সেই রাগিণী শুনবে নীরব হেসে।

আজও সময় হয় নি কি তার, কাজ কি আছে বাকি—
ওগো, ওই-যে সন্ধ্যা নামে সাগরতীরে।