পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫১০
গীতাঞ্জলি

লেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে—
অভিশাপ আঁকি দিল তোমার জাতির অহংকারে।
সবারে না যদি ডাক’, এখনো সরিয়া থাক’,
আপনারে বেঁধে রাখ চৌদিকে জড়ায়ে অভিমান—
মৃত্যু-মাঝে হবে তবে চিতাভস্মে সবার সমান।

 ২০ আষাঢ় ১৩১৭


ধুলামন্দির

ভজন পূজন সাধন আরাধনা সমস্ত থাক্ পড়ে।
রুদ্ধদ্বারে দেবালয়ের কোণে কেন আছিস ওরে!
অন্ধকারে লুকিয়ে আপন-মনে
কাহারে তুই পুজিস সংগোপনে,
নয়ন মেলে দেখ্‌ দেখি তুই চেয়ে— দেবতা নাই ঘরে।

তিনি গেছেন যেথায় মাটি ভেঙে করছে চাষা চাষ—
পাথর ভেঙে কাটছে যেথায় পথ, খাটছে বারো মাস।
রৌদ্রে জলে আছেন সবার সাথে,
ধুলা তাঁহার লেগেছে দুই হাতে—
তাঁরি মতন শুচি বসন ছাড়ি আয় রে ধুলার ’পরে।

মুক্তি? ওরে, মুক্তি কোথায় পারি, মুক্তি কোথায় আছে!
আপনি প্রভু সৃষ্টিবাধন প’রে বাঁধা সবার কাছে।
রাখো রে ধ্যান, থাক্ রে ফুলের ডালি,
ছিঁডুক বস্ত্র, লাগুক ধুলাবালি—
কর্মযোগে তাঁর সাথে এক হয়ে ঘর্ম পড়ুক ঝরে।

করা। গোরাই
২৭ আষাঢ় ১৩১৭