পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গীতিমাল্য
৫১৯

সকাল-সাঁঝে সুর যে বাজে ভুবন-জোড়া তোমার নাটে,
আলোর জোয়ার বেয়ে তোমার তরী আসে আমার ঘাটে।
শুনব কি আর বুঝব কিবা, এই তো দেখি রাত্রিদিবা
ঘরেই তোমার আনাগোনা— পথে কি আর তোমায় খুঁজি।

শান্তিনিকেতন
২ চৈত্র ১৩২০


সুরের আগুন

তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে
এ আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে।
যত সব মরা গাছের ডালে ডালে নাচে আগুন তালে তালে,
আকাশে হাত তোলে সে কার পানে?

আঁধারের তারা যত অবাক হয়ে রয় চেয়ে,
কোথাকার পাগল হাওয়া বয় ধেয়ে!
নিশীথের বুকের মাঝে এই-যে অমল উঠল ফুটে স্বর্ণকমল,
আগুনের কী গুণ আছে কে জানে।

২৪ চৈত্র [১৩২০] 


গানের টান

কেন তোমরা আমায় ডাক, আমার মন না যানে।
পাই নে সময় গানে গানে।
পথ আমারে শুধায় লোকে, পথ কি আমার পড়ে চোখে,
চলি যে কোন দিকের পানে গানে গানে।

দাও না ছুটি, ধর ত্রুটি, নিই নে কানে।
মন ভেসে যায় গানে গানে।
আজ যে কুসুম ফোটার বেলা, আকাশে আজ রঙের মেলা—
সকল দিকেই আমায় টানে গানে গানে।

কলিকাতা
২৭ চৈত্র [১৩২০]