পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বলাকা
৫৩৩

আপদ আছে, জানি আঘাত আছে—
তাই জেনে তো বক্ষে পরান নাচে,
ঘুচিয়ে দে ভাই, পুঁথিপোড়োর কাছে
পথে চলার বিধিবিধান যাচা।
আয় প্রমুক্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

চিরযুবা তুই যে চিরজীবী,
জীর্ণ জরা ঝরিয়ে দিয়ে
প্রাণ অফুরান ছড়িয়ে দেদার দিবি।
সবুজ নেশায় ভোর করেছিস ধরা,
ঝড়ের মেঘে তোরই তড়িৎ ভরা,
বসন্তেরে পরাস আকুল করা
আপন গলার বকুল-মাল্যগাছা।
আয় রে অমর, আয় রে আমার কাঁচা।

শান্তিনিকেতন
১৫ বৈশাখ ১৩২১


শঙ্খ

তোমার শঙ্খ ধুলায় প’ড়ে, কেমন করে সইব!
বাতাস আলো গেল মরে, একি রে দুর্দৈব!
লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে, গান আছে যার ওঠ্-না গেছে,
চলবি যারা চল্‌ রে ধেয়ে—আয়-না রে নিঃশঙ্ক।
ধুলায় পড়ে রইল চেয়ে ওই-যে অভয় শঙ্খ।

চলেছিলেম পূজার ঘরে সাজিয়ে ফুলের অর্ঘ্য।
খুঁজি সারা দিনের পরে কোথায় শান্তিস্বর্গ।
এবার আমার হৃদয়ক্ষত ভেবেছিলেম হবে গত,
ধুয়ে মলিন চিহ্ন যত হব নিষ্কলঙ্ক।
পথে দেখি, ধুলায় নত তোমার মহাশঙ্খ।