পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
কড়ি ও কোমল

কোথা কুসুমিত তনু পূর্ণবিকশিত—
কম্পিত পুলকভরে, যৌবনকাতর!
তখন কি মনে পড়ে সেই ব্যাকুলতা,
সেই চিরপিপাসিত যৌবনের কথা,
সেই প্রাণপরিপূর্ণ মরণ-অনল—
মনে প’ড়ে হাসি আসে? চোখে আসে জল?


মরীচিকা

এসো, ছেড়ে এসো সখী, কুসুমশয়ন—
বাজুক কঠিন মাটি চরণের তলে।
কত আর করিবে গো বসিয়া বিরলে
আকাশকুসুমবনে স্বপন চয়ন!
দেখো, ওই দূর হতে আসিছে ঝটিকা—
স্বপ্নরাজ্য ভেসে যাবে খর অশ্রুজলে।
দেবতার বিদ্যুতের অভিশাপশিখা
দহিবে আঁধার নিদ্রা নির্মল অনলে।
চলো গিয়ে থাকি দোঁহে মানবের সাথে
সুখে দুঃখে যেথা সবে গাঁথিছে আলয়—
হাসি কান্না ভাগ করি ধরি হাতে হাতে
সংসারসংশয়রাত্রি রহিব নির্ভয়।
সুখরৌদ্রমরীচিকা নহে বাসস্থান,
‘মিলায় মিলায়’ বলি ভয়ে কাঁপে প্রাণ॥