পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬২
পলাতকা

নিষ্কৃতি

মা কেঁদে কয়, ‘মঞ্জুলি মোর ওই তো কচি মেয়ে,
ওরই সঙ্গে বিয়ে দেবে, বয়সে ওর চেয়ে
পাঁচগুণে। সে বড়ো—
তাকে দেখে বাছা আমার ভয়েই জড়োসড়ো।
এমন বিয়ে ঘটতে দেব নাকো।’
বাপ বললে, ‘কান্না তোমার রাখো।
পঞ্চাননকে পাওয়া গেছে অনেক দিনের খোঁজে—
জান না কি মস্ত কুলীন ও যে!
সমাজে তো উঠতে হবে, সেটা কি কেউ ভাবো?
ওকে ছাড়লে পাত্র কোথায় পাব!’
মা বললে, ‘কেন, ওই-যে চাটুজ্জেদের পুলিন,
নাই-বা হল কুলীন,
দেখতে যেমন তেমনি স্বভাবখানি,
পাস করে ফের পেয়েছে জলপানি—
সোনার টুকরো ছেলে।
এক পাড়াতে থাকে ওরা, ওরই সঙ্গে হেসে খেলে
মেয়ে আমার মানুষ হল— ওকে যদি বলি আমি আজই
এখনি হয় রাজি।’
বাপ বললে, ‘থামো!
আরে আরে রামোঃ!
ওরা আছে সমাজের সব-তলায়।
বামুন কি হয় পৈতে দিলেই গলায়!
দেখতে-শুনতে ভালো হলেই পাত্র হল! রাধে!
স্ত্রীবুদ্ধি কি শাস্ত্রে বলে সাধে!’

যেদিন ওরা গিনি দিয়ে দেখলে ক’নের মুখ
সেদিন থেকে মঞ্জুলিকার বুক