পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৭৪
শিশু ভোলানাথ

আমার ছুটি সেজে বেড়ায় তোমার ছুটির সাজে,
তোমার কণ্ঠে আমার ছুটির মধুর বাঁশি বাজে।
আমার ছুটি তোমারই ওই চপল চোখের নাচে,
তোমার ছুটির মাঝখানেতেই আমার ছুটি আছে।

তোমার ছুটির খেয়া বেয়ে শরৎ এল মাঝি,
শিউলিকানন সাজায় তোমার শুভ্র ছুটির সাজি।
শিশির-হাওয়া শিরশিরিয়ে কখন রাতারাতি
হিমালয়ের থেকে আসে তোমার ছুটির সাথি।
আশ্বিনের এই আলো এল ফুল-ফোটানো ভোরে
তোমার ছুটির রঙে রঙিন চাদরখানি প’রে।

আমার ঘরে ছুটির বন্যা তোমার লাফে ঝাঁপে,
কাজকর্ম হিসাবকিতাব থরথরিয়ে কাঁপে।
গলা আমার জড়িয়ে ধর, ঝাঁপিয়ে পড় কোলে—
সেই তো আমার অসীম ছুটি প্রাণের তুফান তোলে।
তোমার ছুটি কে যে জোগায় জানি নে তার রীত—
আমার ছুটি জোগাও তুমি, ওইখানে মোর জিত।


মনে-পড়া

মাকে আমার পড়ে না মনে।
শুধু কখন খেলতে গিয়ে হঠাৎ অকারণে
একটা কী সুর গুন্‌গুনিয়ে কানে আমার বাজে,
মায়ের কথা মিলায় যেন আমার খেলার মাঝে।
মা বুঝি গান গাইত আমার দোলনা ঠেলে ঠেলে—
মা গিয়েছে, যেতে যেতে গানটি গেছে ফেলে।

মাকে আমার পড়ে না মনে।
শুধু যখন আশ্বিনেতে ভোরে শিউলিবনে