কোন্ ছন্দে, কোন্ রূপে! যেমনি অপূর্ব হোক নাকো,
তবু আশা করি, যেন মনের একটি কোণে রাখ
ধরণীর ধূলির স্মরণ, লাজে ভয়ে দুঃখে সুখে
বিজড়িত— আশা করি, মর্তজন্মে ছিল তব মুখে
যে বিনম্র স্নিগ্ধ হাস্য, যে স্বচ্ছ সতেজ সরলতা,
সহজ সত্যের প্রভা, বিরল সংযত শান্ত কথা,
তাই দিয়ে আরবার পাই যেন তব অভ্যর্থনা
অমর্তলোকের দ্বারে—ব্যর্থ নাহি হোক এ কামনা।
তপোভঙ্গ
যৌবনবেদনারসে-উচ্ছল আমার দিনগুলি
হে কালের অধীশ্বর, অন্যমনে গিয়েছ কি ভুলি,
হে ভোলা সন্ন্যাসী?
চঞ্চল চৈত্রের রাতে কিংশুকমঞ্জরি-সাথে
শূন্যের অকূলে তারা অযত্নে গেল কি সব ভাসি?
আশ্বিনের বৃষ্টিহারা শীর্ণশুভ্র মেঘের ভেলায়
গেল বিস্মৃতির ঘাটে স্বেচ্ছাচারী হাওয়ার খেলায়
নির্মম হেলায়?
একদা সে দিনগুলি তোমার পিঙ্গল জটাজালে
শ্বেত রক্ত নীল পীত নান। পুষ্পে বিচিত্র সাজালে,
গেছ কি পাসরি?
দস্যু তারা হেসে হেসে হে ভিক্ষুক, নিল শেষে
তোমার ডম্বরু শিঙা, হাতে দিল মঞ্জীরা-বাঁশরি;
গন্ধভারে আমন্থর বসন্তের উন্মাদনরসে
ভরি তব কমণ্ডলু নিমজ্জিল নিবিড় আলসে
মাধুর্যরভসে।