পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূরবী
৫৯৭

কোথা তুমি, শেষবার যে ছোঁয়াবে তব স্পর্শমণি
আমার সংগীতে?
মহানিস্তব্ধের প্রান্তে কোথা বসে রয়েছ রমণী,
নীরব নিশীথে?

মহেন্দ্রের বজ্র হতে কালো চক্ষে বিদ্যুতের আলো
আনো আনো ডাকি—
বর্ষণকাঙাল মোর মেঘের অন্তরে বহ্নি জ্বালো
হে কালবৈশাখী।
অশ্রুভারে-ক্লান্ত তার স্তব্ধ মূক অবরুদ্ধ দান
কালো হয়ে উঠে।
বন্যাবেগে মুক্ত করো, রিক্ত করি করো পরিত্রাণ—
সব লও লুটে।

তার পরে যাও যদি যেয়ো চলি, দিগন্ত-অঙ্গন
হয়ে যাবে স্থির।
বিরহের শুভ্রতায় শূন্যে দেখা দিবে চিরন্তন
শান্তি সুগম্ভীর।
স্বচ্ছ আনন্দের মাঝে মিলে যাবে সর্বশেষ লাভ,
সর্বশেষ ক্ষতি;
দুঃখে সুখে পূর্ণ হবে অরূপসুন্দর আবির্ভাব—
অশ্রুধৌত জ্যোতি।

ওরে পান্থ, কোথা তোর দিনান্তের যাত্রাসহচরী?
দক্ষিণপন
বহুক্ষণ চলে গেছে অরণ্যের পল্লব মর্মরি;
নিকুঞ্জভবন
গন্ধের ইঙ্গিত দিয়ে বসন্তের উৎসবের পথ
করে না প্রচার।