পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহুয়া
৬২৫

পথের বাঁধন

পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি,
আমরা দুজন চলতি হাওয়ার পন্থী।
রঙিন নিমেষ ধুলার দুলাল
পরানে ছড়ায় আবীর গুলাল,
ওড়না ওড়ায় বর্ষার মেঘে দিগঙ্গনার নৃত্য—
হঠাৎ-আলোর ঝল্‌কানি লেগে ঝলমল করে চিত্ত।

নাই আমাদের কনকচাপার কুঞ্জ;
বনবীথিকায় কীর্ণ বকুলপুঞ্জ।
হঠাৎ কখন সন্ধ্যাবেলায়
নামহারা ফুল গন্ধ এলায়—
প্রভাতবেলায় হেলাভরে করে অরুণকিরণে তুচ্ছ
উদ্ধত যত শাখার শিখরে রডোডেন্‌ড্রন-গুচ্ছ।

নাই আমাদের সঞ্চিত ধনরত্ন,
নাই রে ঘরের লালনললিত যত্ন।
পথপাশে পাখি পুচ্ছ নাচায়,
বন্ধন তারে করি না খাঁচায়—
ডানা-মেলে-দেওয়া মুক্তিপ্রিয়ের কূজনে দুজনে তৃপ্ত।
আমরা চকিত অভাবনীয়ের ক্বচিৎ কিরণে দীপ্ত।

[বাঙ্গালোর]
আযাঢ় ১৩৩৫

অসমাপ্ত

বোলো তারে, বোলো—
এত দিনে তারে দেখা হল।
তখন বর্ষণশেষে ছুঁয়েছিল রৌদ্র এসে
উন্মীলিত গুল্‌মোরের থোলো।
বনের মন্দির-মাঝে তরুর তম্বুরা বাজে,
অনন্তের উঠে স্তবগান—