পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুনশ্চ
৬৫৫

ধীরে ধীরে হাওয়া দিয়েছে—
টলমল করছে পুকুরের জল,
ঝিলমিল করছে বাতাবিলেবুর পাতা।

চেয়ে দেখি আর মনে হয়—
এ যেন আর-কোনো একটা দিনের আবছায়া,
আধুনিকের বেড়ার ফাঁক দিয়ে
দূরকালের কার একটি ছবি নিয়ে এল মনে।
স্পর্শ তার করুণ, স্নিগ্ধ তার কণ্ঠ,
মুগ্ধ সরল তার কালো চোখের দৃষ্টি।
তার সাদা শাড়ির রাঙা চওড়া পাড়
দুটি পা ঘিরে ঢেকে পড়েছে;
সে আঙিনাতে আসন বিছিয়ে দেয়,
সে আঁচল দিয়ে ধুলো দেয় মুছিয়ে,
সে আম-কাঁঠালের ছায়ায় ছায়ায় জল তুলে আনে—
তখন দোয়েল ডাকে সজনের ডালে,
ফিঙে লেজ দুলিয়ে বেড়ায় খেজুর-ঝোপে।
যখন তার কাছে বিদায় নিয়ে চলে আসি
সে ভালো করে কিছুই বলতে পারে না;
কপাট অল্প একটু ফাঁক ক’রে পথের দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে—
চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।

 ২৫ শ্রাবণ ১৩৩৯


ক্যামেলিয়া

নাম তার কমলা।
দেখেছি তার খাতার উপরে লেখা—
সে চলেছিল ট্রামে, তার ভাইকে নিয়ে কলেজের রাস্তায়।
আমি ছিলেম পিছনের বেঞ্চিতে।