পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৩৮
গীতবিতান

২০

কার চোখের চাওয়ার হাওয়ায় দোলায় মন,
তাই কেমন হয়ে আছিস সারা ক্ষণ।
হাসি যে তাই অশ্রুভারে নোওয়া,
ভাব্‌না যে তাই মৌন দিয়ে ছোঁওয়া,
ভাষায় যে তোর সুরের আবরণ।

তোর পরানে কোন্ পরশমণির খেলা,
তাই হৃদ্‌গগনে সোনার মেঘের মেলা।
দিনের স্রোতে তাই তো পলকগুলি
ঢেউ খেলে যায় সোনার ঝলক তুলি,
কালোয় আলোয় কাঁপে আঁখির কোণ।

হাম্বুর্গ
৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৬


২১

সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায় বিদেশী নায়ে!
তাহারি রাগিণী লাগিল গায়ে।
সে সুর বাহিয়া ভেসে আসে কার সুদূর বিরহবিধুর হিয়ার
অজানা বেদনা, সাগরবেলার অধীর বায়ে
বনের ছায়ে।
তারি গুঞ্জন লাগিল গায়ে।

তাই শুনে আজি বিজন প্রবাসে হৃদয় মাঝে
শরৎ-শিশিরে ভিজে ভৈরবী নীরবে বাজে।
ছবি মনে আনে আলোতে ও গীতে— যেন জনহীন নদীপথটিতে
কে চলেছে জলে কলস ভরিতে অলস পায়ে
বনের ছায়ে।
তাহারি আভাস লাগিল গায়ে।

মায়র জাহাজ
২ অক্টোবর ১৯২৭