এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
মেঘনাদবধ কাব্য
গণ্ডারের শৃঙ্গে গড়া কোষা কোষী, ভরা,
হে জাহ্নবি! তব জলে, কলুষনাশিনী
তুমি। পাশে হেমঘণ্টা, উপহার নানা,
হেম-পাত্রে; রুদ্ধ দ্বার,—ব’সেছে একাকী
রথীন্দ্র, নিমগ্ন তপে চন্দ্রচূড় যেন—
যোগীন্দ্র—কৈলাস-গিরি তব উচ্চ-চূড়ে।
যথা ক্ষুধাতুর ব্যাঘ্র পশে গোষ্ঠ-গৃহে
যমদূত, ভীমবাহু লক্ষ্মণ পশিলা
মায়াবলে দেবালয়ে। ঝন্ঝনিল অসি
পিধানে, ধ্বনিল বাজী তূণীর ফলকে,
কাঁপিল মন্দির ঘন বীরপদভরে।
চমকি মুদিত-আঁখি মেলিলা রাবণি।
দেখিলা সম্মুখে বলী দেবাকৃতি রথী—
তেজস্বী মধ্যাহ্নে যথা দেব অংশুমালী!
সাষ্টাঙ্গে প্রণমি শূর, কৃতাঞ্জলিপুটে,
কহিলা,—“হে বিভাবসু, শুভক্ষণে আজি
পূজিল তোমারে দাস, তেঁই, প্রভু, তুমি
পবিত্রিলা লঙ্কাপুরী ও পদ-অর্পণে!
কিন্তু কি কারণে, কহ, তেজস্বি! আইলা
রক্ষঃকুলরিপু নর লক্ষ্মণের রূপে
প্রসাদিতে এ অধীনে? এ কি লীলা তব
প্রভাময়?” পুনঃ বলী নমিলা ভূতলে।