এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
মেঘনাদবধ কাব্য
সহসা পূরিল বিশ্ব। ত্রিদিবে, পাতালে,
মর্ত্যে, মরামর জীব প্রমাদ গণিলা
আতঙ্কে। যথায় বসি হৈম-সিংহাসনে
সভায় কর্ব্বুর-পতি, সহসা পড়িল
কনক-মুকুট খসি, রথচূড়া যথা
রিপুরথী কাটি যবে পড়ে রথতলে।
সশঙ্ক লঙ্কেশ-শূর স্মরিলা শঙ্করে।
প্রমীলার বামেতর নয়ন নাচিল।
আত্মবিস্মৃতিতে, হায়, অকস্মাৎ সতী
মুছিল! সিন্দূরবিন্দু সুন্দর ললাটে।
মূর্চ্ছিলা রাক্ষসেন্দ্রাণী মন্দোদরী-দেবী
আচম্বিতে। মাতৃকোলে নিদ্রায় কাঁদিল
শিশুকুল আর্তনাদে, কাঁদিল যেমতি
বজ্রে বজ্রকুলশিশু, যবে শ্যাম-গুণমণি,
আঁধারি সে ব্রজপুর, গেলা মধুপুরে।
অন্যায় সমরে পড়ি, অসুরারি-রিপু,
রাক্ষসকুল-ভরসা, পরুষ বচনে
কহিলা লক্ষ্মণ-শূরে; —“ বীরকুলগ্লানি,
সুমিত্রানন্দন, তুই! শতধিক্ তোরে!
রাবণনন্দন আমি, না ডরি শমনে।
কিন্তু তোর অস্ত্রাঘাতে মরিনু যে আজি;
পামর, এ চিরদুঃখ রহিল রে মনে