পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পৌরাণিকী

হইয়াছিল, এই শিবহীন নিমন্ত্রণ ব্যাপারের জন্য মার্জ্জনা ভিক্ষা করিতে আসিয়াছি।”

 দেবাদিদেবের বিম্বোষ্ঠে মৃদু হাস্য প্রকাশিত হইল। ললাটের অর্দ্ধেন্দুর রশ্মিতে সেই হাস্য মনোহর হইল। তিনি বলিলেন, “যজ্ঞহীন হইয়া ধরিত্রী পীড়িত হইতেছেন। যজ্ঞ হইলেই মঙ্গল, আমাদের নিমন্ত্রণ নাই বা হইল; আমি কৈলাস পর্ব্বতে থাকিতেই ভালবাসি-নন্দিকেশ্বর এবং আমি, কতকটা নির্জ্জনতা-প্রিয় হইয়া পড়িয়াছি। নিমন্ত্রণে যাওয়া আসা আমাদের পক্ষে ক্লেশকর ভিন্ন কিছুই নহে। কিন্তু তুমি সতীকে দক্ষগৃহের যজ্ঞের সংবাদ দিও না। তাঁহার পিতা আমার প্রতি বিরূপ হইয়াছেন। আমি তাঁহাকে তাহা জানাই নাই। তিনি এই সকল ব্যাপার শুনিলে মনে কষ্ট পাইবেন।”

 নারদ ঘুরিয়া ঘুরিয়া কৈলাস পর্ব্বত দেখিতে লাগিলেন। উচ্চ দেবদারু-দ্রুমের নিম্নের কোথাও বেদী প্রস্তুত, সেখানে শিব যোগাসনে আসীন হন। কোথাও সতীর বাহন সিংহ মহাদেবের বৃষের অঙ্গলেহন করিয়া সখ্য জানাইতেছে। অপূর্ব্ব ধূস্তূর-পুষ্পরাজি চারিদিকে ফুটিয়া তীব্রমধুর গন্ধে দিক্‌ প্রফুল্ল করিতেছে। কোথায়ও হরীতকীর বন ও নিম্নবৃক্ষের শ্রেণী। যেখানে হর ও সতী একত্রে কথোপকথন করেন, সেই মনোহর স্থানটি যেন চিত্রে লিখিত। সেখানে রজতখণ্ড-পতনের শব্দের ন্যায় ঝঙ্কার করিয়া রজতের ন্যায় শুভ্রধার বিশিষ্ট অলকনন্দা বহিয়া যাইতেছে। নদীর প্রক্ষালিত শিলার বিভূতিস্পর্শে তাহার শুভ্রতা স্থানে স্থানে ম্লান হইয়া গিয়াছে।

 দেবর্ষি দেখিলেন, কর্ণিকার পুষ্পতরুমূলে সতী দাঁড়াইয়া আছেন। তাপসীর বেশ, অঙ্গযষ্টিকে অপূর্ব্ব কোমলতা প্রদান করিয়া একখানি বল্কল

২২