পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সতী

 মহাদেব দেবীর আগমনপ্রভাব বুঝিলেন। ব্রহ্মানন্দ টুটিয়া গেল। কোন ব্যাকুল প্রার্থনার আবেশে তাহার দৃষ্টি নিম্নদিকে আবদ্ধ হইল। মনোময়ী বাক্য উচ্চারণ না করিয়া মৌনভাবে তাহার প্রার্থনা শিবকে বুঝাইয়া দিলেন।

 শিবের ধ্যানভঙ্গ হইল। তিনি দেখিলেন, পদ্মনালের ন্যায় কোমলকান্তি সতী যুক্ত করে দাঁড়াইয়া আছেন। তিনি সতীকে আদর করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “দেবীর কি অভিলাষ তাঁহাকে পূর্ণ করিতে হইবে?” দেবী বলিলেন, “ভর্ত্তৃদেব, নারদ আমাকে বলিয়া গেলেন, আমার পিতৃগৃহসম্বন্ধে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি নিষিদ্ধ। আমার আর কোন কথা শুনিবায় প্রতীক্ষা না করিয়া তিনি বীণা বাজাইতে বাজাইতে চলিয়া গেলেন। আমার প্রাণ বড় ব্যাকুল হইয়াছে, আমি নারদের কথার ভাব বুঝিতে পারি নাই।”

 শিব বলিলেন, “আমি তাঁহাকে মানা করিয়াছিলাম। কিন্তু তুমি এতটা জানিয়াছ যে, এখন আর গোপন করা চলে না। তোমার পিতা দক্ষ বাজপেয় ও বার্হস্পত্য যজ্ঞ অনুষ্ঠান করিতেছেন। শুনিলাম, আমাদিগকে বাদ দিয়া বিশ্বশুদ্ধ সকলকে নিমন্ত্রণ করা হইয়াছে। আমি নারদকে এই সংবাদ দিতে বারণ করিয়াছিলাম।” দক্ষ যে শিবের প্রতি ক্রুদ্ধ হইয়াছিলেন, শিব তাহা সতীকে বলিতে কুণ্ঠিত হইলেন।

 সতী করজোড়ে দাঁড়াইয়া রহিলেন। তপস্বিনীর ত্রিনয়নে অশ্রু দেখা দিল। শিব বলিলেন, “তুমি কি পিতৃগৃহে যাইতে অভিলাষী হইয়াছ? বিনা আহ্বানে তথায় যাওয়া কি উচিত?”

 সতী উত্তর করিতে পারিলেন না, তথাপি যেন মনোভাব ব্যক্ত করিতে ইচ্ছুক। ব্রীড়াবনত পুষ্পলতার ন্যায় তিনি মহাদেবের পাদপদ্ম

২৫