পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পৌরাণিকী

খুস্তূরসেবী ভাঙ্গড় অপমান করিয়াছে—সতীকে সেই ভূতপ্রেতসেব্য বিরূপাক্ষের হস্তে দিয়াছি! আমি সতীকে আর দেখিতে চাহি না। সতী পিতৃগৃহে তাহার পিতার বৈভব দেখিয়া যাক্‌ এবং সে যে উপেক্ষিতা, তাহার স্বামী যে নগণ্য, এ কথা ভাল করিয়া বুঝিয়া যাক।”

 এই সময় পূষা ঋষি বলিলেন, “সেই শিবদূত নন্দীটার মতো কালো একটা বীভৎস আকৃতি দেখা যাইতেছে, অন্তঃপুরের দ্বারের পার্শ্বে ভ্রূকুঞ্চিত করিয়া দাঁড়াইয়া আছে।”

 দক্ষের ক্রোধাগ্নিতে এইবার আহুতি পড়িল। “কি ভাঙ্গড় বেটা সেই দুরাত্মা অনুচরকে সতীর সঙ্গে পাঠাইতে সাহসী হইয়াছে? আজ সতীকে আমি উচিত শিক্ষা দিব।”

 ভগদেবের দিকে বক্র-দৃষ্টিপাত করিয়া দক্ষ বলিলেন, “সতীকন্যা এসেছে; এত বড় উৎসবটা, ভাঙ্গড় আর না পাঠাইয়া কি করে। যা হোক দুষ্টের শিক্ষা দেওয়া উচিত; আমি সতীকে যজ্ঞস্থলে আনিয়া এইখানে সেই মর্কটাক্ষ যোগীর ইতিহাস কীর্ত্তন করিব, সভাস্থলে এই সকল কথা হইলে তাহার অপমানের চূড়ান্ত হইবে।”

 ভৃগু ও পূষার উৎসাহে স্পর্দ্ধিত দক্ষ সতীকে অন্তঃপুর হইতে সেই যজ্ঞশালায় ডাকাইয়া আনিলেন। প্রসূতি বাতাহত কদলীপত্রের ন্যায় অন্তঃপুরে কম্পিত দেহে রহিলেন, আজ কি ঘটিবে ভাবিয়া তাঁহার মুখখানি বিশুষ্ক হইয়া গেল।

 ধূসর তমিস্রাবৃত গোধূলির ন্যায় বহুলবসনা, অক্ষবলয়া সতী সভাস্থলে উপস্থিত হইয়া, নতচক্ষে দক্ষ এবং অপরাপর পূজনীয়বর্গকে প্রণাম করিলেন। তাঁহার পাদপদ্মের প্রভাব হোমাগ্নি জ্যোতিষ্মান্‌

৪৪