পাতা:সময় অসময় নিঃসময় - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এগিয়ে নেওয়া যায় না। এর পথ ও পাথেয় পুরোপুরি আলাদা। বিশেষত ইদানীং যখন নয়া-উপনিবেশবাদের দোসর সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ সর্বশেষ তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে ঘরে-ঘরে পৌছে গেছে এবং বরাক উপত্যকার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলও না-সংস্কৃতির মহাপ্লাবনে ভেসে যেতে বসেছে—মানবিক উত্তরাধিকার রক্ষায় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির ভূমিকা ও কৃকৌশল পুনর্বিবেচনা না করে উপায় নেই। ব্যবহারিক রাজনীতির পুরোনো কৌশল যে অনেকটাই ভোঁতা হয়ে পড়েছে, ইদানীংকার অসাড় পরিস্থিতিই তার প্রমাণ।

 নতুন ধরনের বহু জটিল প্রশ্ন ও সেইসব প্রশ্নের অভিঘাতকে কীভাবে কার্যকরী মোকাবিলা করা সম্ভব। -সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠকদের একথা ভেবে দেখতেই হবে। কঠিন এ সময়ে একমাত্র ভাবাদর্শের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েই সাংস্কৃতিক আন্দোলন গভীরতর ও ব্যাপকতর উত্তরণের পথ। দেখাতে পারে। চরম আত্মিক বিপর্যয়ের মুহুর্তেও নিরাপদ অভ্যাসের কূপমণ্ডুকতা ছেড়ে বেরোতে পারেন শুধু সংস্কৃতি-সেনানী। যে-পথে আলো জেলে পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে, সে-পথে আত্মপ্রতারণা অচল। ভণ্ডামির প্রগলভতাকে জয় করেই মানুষের মানবিক নির্যাসে প্রতিষ্ঠিত পরিচয়ে উত্তীর্ণ। হওয়া সম্ভব। অন্ধকার ও সংশয়ের বলয় পেরিয়ে আলোতে পৌছানোর লক্ষ্যে সংস্কৃতিযোদ্ধা অবিচল থাকুন, এই আমাদের প্রত্যাশা। পীড়ার সংক্রমণ অনেকদূর ছড়িয়েছে, আরোগ্য-সংকেত থাকলেও দুরূহ লড়াই সামনে। বিনিদ্র রাত কাটবে অনেক, দ্বিধার প্রহর পেরোবে। নিতে হবে তবু জাগ্রত প্রহরীর ভূমিকা।

১২৬