, е : সমাজ বাঙালীরা সেই ষড়যন্ত্রে ত যোগ দিয়াছিল! বাঙালার সে এক গৌরবের দিন। তখন বাঙালা স্বাধীনই থাকুক আর অধীনই থাকুক, মুসলমান নবাবের হাতেই থাকুক আর স্বদেশীয় রাজার হাতেই থাকুক, তাহার পক্ষে সে একই কথা । সে আপন তেজে আপনি তেজস্বী হইয়া উঠিয়াছিল। A. ங் আসল কথা বাংলায় সেই এক দিন সমস্ত একাকার হইবার যে হইয়াছিল। তাই কতকগুলো লোক খেপিয়া চৈতন্তকে কলসীর কানা ছুড়িয়া মারিয়াছিল। কিন্তু কিছুই করিতে পারিল না। কলসীর কানা ভাসিয়া গেল। দেখিতে দেখিতে এমনি একাকার হইল যে, জাতি রহিল না, কুল রহিল না, হিন্দু মুসলমানেও প্রভেদ রহিল না। তখন ত আর্যাকুলতিলকেরা জাতিভেদ লইয়া তর্ক তুলে নাই। আমি ত বলি তর্ক করিলেই তর্ক উঠে। বৃহৎ ভাব যখন অগ্রসর হইতে থাকে তখন তর্ক বিতর্ক খুটিনাটি সমস্তই অচিরাং আপনাপন গর্তের মধ্যে সুড় মুড় করিয়া প্রবেশ করে। কারণ মরার বাড়া আর গাল নাই। বৃহৎ ভাব আসিয়া বলে, সুবিধা অসুবিধার কথা হইতেছে না আমার জন্ত সকলকে মরিতে হইবে । লোকেও তাহার আদেশ শুনিয়া মরিতে বসে। মরিবার সময় খুটিনাটি লইয়া তর্ক করে কে বল! চৈতন্ত যখন পথে বাছির হইলেন তখন বাংলা দেশের গানের সুর পৰ্যন্ত ফিরিয়া গেল। তখন এক-কণ্ঠবিহারী বৈঠকী মুরগুলো কোথায় ভাসিয়া গেল ? তখন সহস্র হৃদয়ের তরঙ্গ হিল্লোল সহস্র কণ্ঠ উচ্ছসিত করিয়া নূতন মুরে আকাশে ব্যাপ্ত হইতে লাগিল। তখন রাগ রাগিণী ঘর ছাড়িয়া পথে বাহির হইল, একজনকে ছাড়িয়া সহস্ৰ জনকে বরণ করিল। বিশ্বকে পাগল করিবার জন্ত কীৰ্ত্তন বলিয়া এক নূতন কীৰ্ত্তন উঠিল। যেমন ভাব তেমনি তাহার কণ্ঠস্বর—অশ্রুজলে ভাসাইয়া সমস্ত একাকার করিবার জন্য ক্রননধ্বনি ! বিজন কক্ষে বসিয়া বিনাইয়া
পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮
অবয়ব