নিশ্চেষ্ট জড়-কঙ্কাল। সে চিন্তা করে না, অনুভব করে; সময়ের পরিবর্ত্তন উপলব্ধি করিতে পারে না। তাহার দক্ষিণে বাঁয়ে নড়িবাব শক্তি নাই। সমস্ত হতভাগ্য জাতি, তাহার সমস্ত ভক্ত উপাসক, যদি তাহার সম্মুখে পড়িয়া পলে পলে আপনার মরণব্রত উদযাপন করে, তথাপি সে কল্যাণ-পথে তিলার্দ্ধমাত্র অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করিতে পারে না।
যাহারা শাস্ত্র হইতে বিধি সংগ্রহ করিয়া লোকাচারকে আঘাত করিতে চেষ্টা করেন, তাঁহারা কি করেন? তাঁহারা মৃতকে মারিতে চাহেন। যাহার বেদনাবোধ নাই তাহার প্রতি অস্ত্র প্রয়োগ করেন, যে অন্ধ, তাহাব নিকট দীপশিখা আনয়ন করেন। অস্ত্র প্রতিহত হয়, দীপশিখা বৃথা আলোকদান করে।
তাঁহাদের আর একটা কথা জানা উচিত। শাস্ত্রও এক সময়ের লোকাচার। তাঁহারা অন্যসময়ের লোকাচারকে স্বপক্ষভুক্ত করিয়া বর্ত্তমানকালের লোকাচারকে আক্রমণ করিতে চাহেন। তাঁহারা বলিতে চাহেন, বহুপ্রাচীনকালে সমুদ্রযাত্রার কোনো বাধা ছিল না। বর্ত্তমান লোকাচার বলে, তখন ছিল না এখন আছে, ইহার কোনে। উত্তর নাই।
এ যেন এক শত্রুকে তাড়াইবার উদ্দেশে আর এক শত্রুকে ডাকা। মোগলের হাত হইতে রক্ষা পাইবার জন্য পাঠানের হাতে আত্মসমর্পণ কথা। যাহার নিজের কিছুমাত্র শক্তি আছে সে এমন বিপদের খেলা খেলিতে চাহে না।
আমাদের কি নিজের কোনো শক্তি নাই? আমাদের সমাজে যদি কোনো দোষের সঞ্চার হয়, যদি তাহার কোনো ব্যবস্থা আমাদের সমস্ত জাতির উন্নতি-পথের ব্যাঘাতস্বরূপ আপন পাষাণ-মস্তক উত্তোলন করিয়া থাকে, তবে তাহা দূর করিতে গেলে আমাদিগকে খুঁজিয়া বাহির করিতে হইবে, বহু প্রাচীনকালে তাহার কোনো নিষেধ-বিধি ছিল কি না? যদি দৈবাৎ পাওয়া গেল, তবে দিনকতক পণ্ডিতে পণ্ডিতে শাস্ত্রে