বিমুখ কারা? তখন গোয়েন্দাগিরি করিয়া সত্যকে মিথ্যা করিয়া তুলিতেছে কারা? তখন ধম্মাধিকরণে বসিয়া অন্যায়েব দণ্ডে দেশপীডনের সাহায্য করিতেছে কারা? তখন, বালকদের অতি পবিত্র গুরুসম্বন্ধ গ্রহণ করিয়াও তাহাদিগকে অপমান ও নির্যাতনের হস্তে অনায়াসে সমর্পণ করিতে উদ্যত হইতেছে কারা? যারা চাকরীর ফাঁস গলায় পরিয়াছে। তারা যে কেবল অন্যায় করিতে বাধ্য হইতেছে তাহা নয়—তারা নিজেকে ভুলাইতেছে—তারা প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিতেছে যে দেশের লোক ভুল করিতেছে। বল দেখি, দেশের যোগ্যতম শিক্ষিতসম্প্রদায়ের কণ্ঠে এই যে চাকরী-শিকলেব টান, ইহা কি প্রাণান্তকর টান! এই টানকে আমরা প্রত্যহই বাড়াইয়া তুলিতেছি কি কবিয়া? নবাবিয়ানা, সাহেবিয়ানা, বাবুয়ানাকে প্রত্যহই উগ্রতর করিয়া মনকে বিলাসের অধীন কবিয়া আপন দাসখতের মেয়াদ এবং কড়ার বাড়াইয়া চলিয়াছি।
জীবনযাত্রাকে লঘু করিবামাত্র দেশব্যাপী এই চাকরীর ফাঁসি এক মুহূর্ত্তে আল্লা হইয়া যাইবে। তখন, চাষবাস বা সামান্য ব্যবসায় প্রবৃত্ত হইতে ভয় হইবে না। তখন এত অকাতরে অসমান সহ্য করিয়া পড়িয়া থাকা সহজ হইবে না।
আমাদের মধ্যে বিলাসিতা বাড়িয়াছে বলিয়া অনেকে কল্পনা করেন যে ইহা আমাদের ধনবৃদ্ধির লক্ষণ। কিন্তু এ-কথা বিচার করিয়া দেখিতে হইবে যে, পূর্ব্বে যে অর্থ সাধারণের কার্য্যে ব্যয়িত হইত, এখন তাহা ব্যক্তিগত ভোগে ব্যয়িত হইতেছে। ইহাতে ফল হইতেছে দেশের ভোগবিলাসের স্থানগুলি সমৃদ্ধিশালী হইয়া উঠিতেছে—সহরগুলি ফাঁপিয়া উঠিতেছে—কিন্তু পল্লীগুলিতে দারিদ্র্যের অবধি নাই। সমস্ত বাংলাদেশে পল্লীতে দেবমন্দির ভাঙিয়া পড়িতেছে, পুষ্করিণীর জল স্নান-পানের অযোগ্য হইতেছে, গ্রামগুলি জঙ্গলে ভরিয়া উঠিয়াছে, এবং যে দেশ