তবে কি পরিবর্ত্তন হইবে না? যেখানে যাহা আছে, চিরকাল কি সেখানে তাহা একই ভাবে চলে?
প্রয়োজনের নিয়মে পবিরর্ত্তন হইবে, অনুকরণের নিয়মে নহে। কারণ, অনুকরণ অনেক সময়ই প্রয়োজনবিরুদ্ধ। তাহা সুখশান্তি স্বাস্থ্যের অনুকূল নহে। চতুর্দ্দিকের অবস্থার সহিত তাহার সামঞ্জস্য নাই। তাহাকে চেষ্টা করিয়া আনিতে হয়, কষ্ট করিয়া রক্ষা করিতে হয়।
অতএব রেলোয়ে ভ্রমণের জন্য, আপিসে বাহির হইবার জন্য, নূতন প্রয়োজনের জন্য, ছাঁটা কাটা কাপড় বানাইয়া লও। সে তুমি নিজের দেশ, নিজের পরিবেশ, নিজের পূর্ব্বাপরের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া প্রস্তুত কর। সম্পূর্ণ ইতিহাসবিরুদ্ধ, ভাববিরুদ্ধ, সঙ্গতিবিরুদ্ধ অনুকরণের প্রতি হতবুদ্ধিব ন্যায় ধাবিত হইয়ো না।
পূরাতনের পরিবর্ত্তন ও নূতনের নির্ম্মাণে দোষ নাই। আবশ্যকের অনুরোধে তাহা সকল জাতিকেই সর্ব্বদা করিতে হয়। কিন্তু এরূপ স্থলে সম্পূর্ণ অনুকরণ পয়োজনের দোহাই দিয়া চলে না। সে প্রয়োজনের দোহাই একটা ছুতামাত্র। কারণ সম্পূর্ণ অনুকরণ কখনই সম্পূর্ণ উপযোগী হইতে পারে না। তাহার হয় ত একাংশ কাজের হইতে পারে, অপরাংশ বাহুল্য। তাহার ছাঁটা কোর্ত্তা হয় ত দৌড়ঝাপের পক্ষে প্রয়োজনীয় হইতে পাবে, কিন্তু তাহার ওয়েষ্টকোট্ হয় ত অনাবশ্যক এবং উত্তাপজনক। তাহার টুপিটা হয়ত খপ্ করিয়া মাথায় পরা সহজ হইতে পারে, কিন্তু তাহার টাই কলার বাধিতে অনর্থক সময় দিতে হয়।
যেখানে পরিবর্ত্তন ও নূতন নির্ম্মান অসম্ভব ও সাধ্যাতীত, সেইখানেই অনুকরণ মার্জনীয় হইতে পারে। বেশভূষায় সে কথা কোনোক্রমেই খাটে না।