সমাজ אסו জড়ত্ব যাহার আরম্ভ, বিকার তাহার পরিণাম । আজ যদি বলি, কে অত ভাবে, তার চেয়ে বিলাতি দোকানে গিয়া এক সুন্টু অর্ডার দিয়া আসি—তবে কাল বলিব, প্যাণ্ট লুনটা খাট হুইয়া গেছে, কে এত হাঙ্গাম করে, ইহাতেই কাজ চলিয়া যাইবে । কাজ চলিয়া যায়। কারণ, বাঙালীসমাজে বিলাতি কাপড়েব অসঙ্গতির দিকে কেহ দৃষ্টিপাত করে না। সেইজন্ত বিলাতফেরৎদের মধ্যেও বিলাতি-সাজ-সম্বন্ধে ঢিলাভাব দেখা যায়,—সস্তার চেষ্টায় বা আলস্তের গতিকে তাহারা অনেকে এমন ভাবে বেশবিদ্যাস করেন যাহা বিধিমত অভদ্র । কেবল তাঁহাই নহে। বাঙালী বন্ধুর বাড়িতে বিবাহ প্রভৃতি শুভকৰ্ম্মে বাঙালীভদ্রলোক সাজিয়া আসিতে তাহার। অবজ্ঞা করেন, আবার বিলাতী-ভদ্রতার নিয়মে নিমন্ত্রণসাজ পরিয়া আসিতেও আলস্ত করেন। পরসজ্জা-সম্বন্ধে কোনটা বিহিত, কোনটা অবিহিত সেট আমাদের মধ্যে প্রচলিত নাই বলিয়া, তাহারা শিষ্টসমাজেব বিধিবিধানের অতীত হইয়া যাইতেছেন। ইংরাজি-সমাজে তাহার। সামাজিকভাবে চলিতে ফিরিতে পান না । দেশী সমাজকে র্তাহারা সামাজিকভাবে উপেক্ষা করিয়া থাকেন—সুতরাং তাহাদের সমস্ত বিধান নিজের বিধান সুবিধার বিধান,——সে বিধানে আলস্ত্য-ঔদাসীন্তকে বাধা দিবার কিছুই নাই। বিলাতের এই সকল ছাড়াকাপড় ইহাদের পরপুরুষের গাত্রে কিরূপ বীভৎস হইয়া উঠিবে, তাহা কল্পনা করিলে লোমহর্ষণ উপস্থিত হয় । কেবল সাজসজ্জা নহে, আচার-ব্যবহারে এ-সকল কথা আরো অধিক খাটে। বিলাত হইতে ফিরিয়া আসিয়া দেশী প্রথা হইতে যাহারা নিজেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করিয়াছেন, তাহাদের আচারব্যবহারকে সদাচার-সদব্যবহারের সীমামধ্যে আবদ্ধ করিয়া রাখিবে (2:
পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮
অবয়ব