O8 সমাজ অনুকরণে ধাবিত হইবে, তাহারা সৰ্ব্বপ্রকারে হাস্তজনক হইয়া উঠিবে, ইহাতেও সন্দেহ নাই । যেটা লজ্জার বিষয়, সেক্টটে লইয়াই বিশেষরূপ গৌরব অনুভব করিতে বসিলে, বন্ধুর কৰ্ত্তব্য, তাহাকে সচেতন করিয়া দেওয়া । যিনি । সাহেবের অনুকবণ করিয়াছি মনে করিয়া গৰ্ব্ববোধ কবেন, তিনি বস্তুত সাহেবীর অনুকরণ কবিতেছেন। সাহেবীব অনুকরণ সহজ, কারণ তাহা বাহিক জড অংশ ; সাহেবের অনুকরণ শক্ত, কারণ তাহ আন্তরিক মনুষ্যত্ব। যদি সাহেবের অনুকরণ করিবার শক্তি র্তাহার থাকিত, তবে সাহেবীর অনুকরণ কখনই কবিতেন না । অতএব কেই যদি শিব গড়িতে গিয়া মাটির গুণে অন্য কিছু গডিয়া বসেন, তবে সেটা লঙ্কয়া লম্ফঝল্ফ না করাই শ্রেয়। আজকাল একটি অদ্ভূত দৃশু আমাদের দেশে দেখা যায়। আমাদের মধ্যে র্যাহারা বিলাতী পোষাক পরেন স্ত্রীগণকে তাহারা সাড়ি পরাইম বাহির কবিতে কুষ্ঠিত হন না। একাসনে গাড়ির দক্ষিণ ভাগে হাটু কোট, বামভাগে বোম্বাই সাড়ি। নব্যবাংলার আদর্শে হরগৌরীরূপ যদি কোনে চিত্রকর চিত্রিত কবেন তবে তাহা যদি বা “সাব্লাইম্” না হয় অন্তত “সারাইমের” অদূরবর্তী আর একটা কিছু হইয়া দাড়াইবে । পশুপক্ষীর রাজ্যে প্রকৃতি অনেক সময় স্ত্রীপুরুষের সাজের এত প্রভেদ করেন যে দম্পতীকে এক জাতীয় বলিয়া চেনা বিশেষ অভিজ্ঞতাসাধ্য হইয়া পড়ে। কেশরের অভাবে সিংহীকে সিংহের পত্নী বলিয়া চেনা কঠিন এবং কলাপের অভাবে ময়ূরের সহিত ময়ূরীর কুটুম্বিত৷ নির্ণয় দুরূহ। বাংলাতেও যদি প্রকৃতি তেমন একটা বিধান করিয়া দিতেন ; স্বামী যদি তাহার নিজের পেখম বিস্তার করিয়া সহধৰ্ম্মিণীর উপরে টেক্কা দিতে পারিতেন তাছা হইলে কোনো কথাই উঠিত না। কিন্তু গৃহকর্তা
পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০
অবয়ব