নূতন দেশ ও নূতন আচার ব্যবহার দেখিয়া আমাদের জ্ঞানের বিস্তার হয় কি না, আমাদের সঙ্কীর্ণতা দূর হয় কি না, ভূখণ্ডের একটি ক্ষুদ্র সীমার মধ্যে কোনো জ্ঞানপিপাসু উন্নতি-ইচ্ছুক ব্যক্তিকে বলপূর্ব্বক বন্ধ করিয়া রাখিবার ন্যায্য অধিকার কাহারও আছে কি না। কিন্তু তাহা না দেখিয়া আমরা দেখিব পরাশর সমুদ্র পার হইতে বলিয়াছেন কি না এবং অত্রি কি বলিয়া তাহার সমর্থন করিয়াছেন।
এমন বিপরীত বিকৃতি কেন ঘটিল? ইহার প্রধান কারণ এই যে, স্বাধীনতাতেই যে-সমস্ত প্রবৃত্তির প্রধান গৌরব তাহাদিগকেই বন্ধনে বদ্ধ করা হইয়াছে।
অভ্যাস বা পরের নির্দ্দেশবশত নহে পরন্তু স্বাধীন বোধশক্তিযোগে যে-ভক্তিবলে আমরা মহত্ত্বের নিকট আত্মসমর্পণ করি তাহাই সার্থক ভক্তি।
কিন্তু আশঙ্কা এই যে, যদি বোধশক্তি তোমার না থাকে! অতএব নিয়ম বাঁধিয়া দেওয়া গেল অমুক সম্প্রদায়কে এই প্রণালীতে ভক্তি করিতেই হইবে। না করিলে সাংসারিক ক্ষতি ও পুরুষানুক্রমে নরকবাস।
গাছ মাটিতে রোপণ করিলে তাহাকে গরুতে খাইতে পারে, তাহাকে পথিকে দলন করিতে পারে, এই ভয়ে তাহাকে লোহার সিন্ধুকে বদ্ধ রাখা হইল। সেখানে সে নিরাপদে রহিল কিন্তু তাহাতে ফল ধরিল না; সজীব গাছ মৃত কাঠ হইয়া গেল।
মানুষের বুদ্ধিকে যতক্ষণ স্বাধীনতা না দেওয়া যায় ততক্ষণ সে ব্যর্থ। কিন্তু যদি সে ভুল করে, অতএব তাহাকে বাঁধ; আমি বুদ্ধিমান যে ঘানিগাছ রোপন করিলাম চোখে ঠুলি দিয়া সেইটেকে সে নিত্যকাল প্রদক্ষিণ করিতে থাক্।
স্বাস্থ্যতত্ত্ব সম্বন্ধে তাহাকে কোনো দিন মাথা ঘুরাইতে হইবে না—