পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র ց (: অতীত ও ভবিষ্যতের দিকে চাহিয়া বর্তমানকে সংযত করিতে হয়। যদি ইচ্ছা কর ত চোখ বুজিয়া ছুটিবার সুখ অনুভব করিতে পার। কিন্তু অবিলম্বে ঘাড় ভাঙিবার সুখটাও টের পাইবে । বৰ্ত্তমানকাল ছুটতেছে বলিয়াই স্তন্ধ অতীত কালের এত মূল্য। অতীতে কালের প্রবল বেগ প্রচণ্ড গতি সংহত হইয়া যেন স্থির আকার ধাবণ করিয়াছে। কালকে ঠাহর করিতে হইলে অতীতের দিকে চাহিতে হয়। অতীত বিলুপ্ত হইলে বর্তমানকালকে কেই ৰ চিনিতে পারে, কেই বা বিশ্বাস করে, তাহাকে সামলায় কাহার সাধ্য ! কেন না, চিনিতে পারিলে জানিতে পারিলে তবে বশ করা যায়। যাহাকে জানিনা সে আমাদের প্রভু হইয়া দাড়ায় । অতএব পরিবর্তনশীল কালকে ভয় করিয়া চল, তাহাকে বশ করিতে চেষ্টা কর, তাহাকে নিতান্ত বিশ্বাস করিয়া আত্মসমপণ করিয়ো না । যাহ থাকে না, চলিয়া যায়, মুহুমুহ পরিবর্তিত হয়, তাহাকে আপনার বলিবে কি করিয়া ! একখণ্ড ভূমিকে আপনার বলা যায়, কিন্তু জলের স্রোতকে আপনার বলিবে কে ? তবে আবার স্ব-কাল জিনিষটা কি ? তুমি লিথিয়াছ আমাদের সেকালে ব্যক্তির প্রতিই ভক্তি প্রতি প্রভৃতি বদ্ধ ছিল, ভাবের প্রতি ভক্তি প্রীতি ছিল না। ব্যক্তির প্রতি ভক্তি প্রতি কিছু মন্দ নহে সে খুব ভালই, সুতরাং আমাদের কালে যে সেটা খুব বলবান ছিল সে-জন্ত আমরা লজ্জিত নছি। কিন্তু তাই বলিয়া যদি বল যে, ভাবের প্রতি আমাদের কালের লোকের ভক্তি প্রীতি ছিল না তবে সে-কথাটা আমাকে অস্বীকার করিতে হয় । আমাদের কালে দুইই ছিল, এবং উভয়েই পরম্পর বনিবনাও করিয়া বাস করিত। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের দেশে যে স্বামীগ্রীতি বা স্বামীভক্তি ছিল ( এখনও হয়ত আছে ) তাহ কি ? তাহ কেবল