পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
সমালোচনা।

 একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক। যখনই আমি মনে করি “লোকহিতার্থে যদি একটা মিথ্যা কথা বলি তাহাতে তেমন দোষ নাই” তখনই আমার মনে যে বিশ্বাস ছিল “সত্য ভাল,” সে বিশ্বাস সঙ্কীর্ণ হইয়া যায়, তখন মনে হয় “সত্য ভাল কেননা সত্য আবশ্যক।” সুতরাং যখনই ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে কল্পনা করিলাম লোকহিতের জন্য সত্য আবশ্যক নহে, তখন স্থির হয় মিথ্যাই ভাল। সময়বিশেষে সত্য মন্দ, মিথ্যা ভাল, এমন যদি আমার মনে হয়, তবে সময়বিশেষেই বা তাহাকে বদ্ধ রাখি কেন? লোকহিতের জন্য যদি মিথ্যা বলি, ত আত্মহিতের জন্যই বা মিথ্যা না বলি কেন?

 উত্তর। আত্মহিত অপেক্ষা লোকহিত ভাল।

 প্রশ্ন। কেন ভাল? সময়বিশেষে সত্যই যদি ভাল না হয়, তবে লোকহিতই যে ভাল এ কথা কে বলিল?

 উত্তর– লোকহিত আবশ্যক বলিয়া ভাল।

 প্রশ্ন– কাহার পক্ষে আবশ্যক?

 উত্তর– আত্মহিতের পক্ষেই আবশ্যক।

 উত্তর– কই, তাহা ত সকল সময় দেখা যায় না। এমন ত দেখিয়াছি পরের অহিত করিয়া আপনার হিত হইয়াছে।

 উত্তর– তাহাকে যথার্থ হিত বলে না।

 প্রশ্ন– তবে কাহাকে বলে?

 উত্তর– স্থায়ী সুখকে বলে।

 তদুত্তর– আচ্ছা, সে কথা আমি বুঝিব। আমার সুখ আমার কাছে। ভালমন্দ বলিয়া চরম কিছুই নাই। আবশ্যক অনাবশ্যক