পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তার্কিক
১৩

অনন্ত জীবন কল্পনা করিতেছি, জগতের এক সীমা হইতে সীমান্তর পর্যন্ত আমার প্রাণের বিচরণভূমি হইয়া গিয়াছে, আমি যখন নূতন নূতন আলোক, নূতন নূতন গ্রহ মাড়াইয়া নূতন নূতন জীবকে স্বজাতি করিয়া, বিস্ময়-বিহ্বল পথিকের মত অনন্ত বৈচিত্র্য দেখিতে দেখিতে অনন্ত পথে যাত্রা করিয়াছি, বিচিত্র জগৎপূর্ণ অনন্ত আকাশের মধ্যে যখন আমার জীবনের আদি অন্ত হারাইয়া গিয়াছে, যখন আমি মনে করিতেছি এই কাঠা-তিনেক জমির চারদিকে পাঁঁচিল তুলিয়া এই খানেই ধূলির মধ্যে ধূলিমুষ্টি হইয়া থাকা আমার চরণ গতি নহে, জলবায়ু আকাশ, চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ নক্ষত্র বিশ্ব-চরাচর আমার অনন্ত জীবনের ক্রীড়া ভূমি,−তখন দূর কর তোমাব যুক্তি, তোমার তর্ক— তোমার ন্যায়শাস্ত্র গলার বাঁঁধিয়া যুক্তির শানবাধান কুয়োর মধ্যে পরমানন্দে তুমি ডুবিয়া মর'। তখন তোমাকে কৈফিয়ৎ দিতে আমার ইচ্ছাও থাকে না অবসরও থাকে না। তুমি যে আমার অতখানি কাড়িতে চাও তাহার বদলে আমাকে কি দিতে পার? তোমার আছে কি? আমি যে জায়গায় বেড়াইতে ছিলাম, তুমি তাহার কিছু ঠিকানা করিয়াছ? সেখানকাব মেরুপ্রদেশের মহাসমুদ্রে তোমার এই বুদ্ধির ফুটো নারিকেল মালায় চড়িয়া কখনো কি আবিষ্কার করিতে বাহির হইয়াছিলে? পৃথিবীর মাটির উপর তুমি রেল পাতিয়াছ, এই ৮০০০ মাইলের ভূগোল তুমি ভালরূপ শিথিয়াছ, অতএব যদি আমি ম্যাডাগাস্কারের জায়গায় কামস্কাটকা কল্পনা করি, তাহা হইলে না হয আমাকে তোমাদের স্কুলের এক ক্লাস নামাই দিও, কিন্তু যে অনন্তের মধ্যে তোমাদের ঐ