পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬
সমালোচনা।

আমাতে কোন যোগই নাই। তোমাকে আমি হীন বলিতেছি না, ভূমি হয়ত মস্ত লোক, তুমি হয়ত রাজা, কিন্তু শাঙ্গরব দুষ্যন্তকে যেরূপ চক্ষে দেখিয়াছিলেন আমিও হয়ত তোমাকে সেইরূপ চক্ষে দেখিবঃ–

 “অভ্যক্তমিব স্নাতঃ, গুচিবগুচিমিব, প্রবুদ্ধইব সুপ্তম্” ইত্যাদি যুক্তির সৈন্য লইয়া তুমি তোমার নিজ রাজ্যে একজন দোর্দ্দণ্ড-প্রতাপ লোক, উহারই সাহায্যে তুমি কত রাজ্য অধিকার করিলে, কত রাজ্য ধ্বংশ করিলে, কিন্তু আমার বিস্তৃত রাজ্যের একতিলও তুমি কাড়িয়া লইতে পার না। তুমি আমাকে হাজার চোখ রাঙাও না কেন আমি ডরাই না। আমার অধিকারে আসিবার ক্ষমতা তুমি হারাইয়াছ, কিন্তু তোমার অধিকারে আমি অনায়াসেই যাইতে পারি। তোমাতে আমাতে বিস্তর প্রভেদ।

 আমার তার্কিক বন্ধু এই বলিযা আমার নিন্দা করেন যে, আমি এক সময়ে যাহা বলিয়াছি আর এক সময়ে তাহার বিপরীত কথা বলি; সে কথাটা ঠিক। কিন্তু তাহার একটা কারণ আছে। আমি যাহা বলি, তাহা প্রাণের ভিতর হইতে বলি, যুক্তি অযুক্তি খতাইয়া হিসাব পত্র করিয়া বলি না। আমি যাহার কথা বলি, মমতার প্রভাবে তাহার সহিত একেবারে মিশাইয়া যাই, সুতরাং কেবল মাত্র তাহার কথাই বলি তাহার উণ্টাদিকের কথাটা বলি না। প্রকৃতিতেও তাহাই হয়। প্রকৃতির দিন প্রকৃতির রাত্রের বিপরীত কথা বলিয়া থাকে,প্রকৃতির পূর্ব্বদিক প্রকৃতির পশ্চিমদিকের কথা বলে না। প্রকৃতির পদে পদে বিরোধী উক্তি দেখিতে পাওয়া যায় কিন্তু তাহারা কি বাস্তবিকই বিরোধী? তাহারা দুই বিপরীত সত্য। আমি আলো