পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৮
সমালোচনা।

হয়। আমরা এরূপ বিদ্রূপ কোনোমতেই অনুমোদন করি না। এরূপ ভাব ইংরাজদের ভাব। কোনো একটি বিখ্যাত মহান্‌ ভাবের কবিতাকে বিদ্রূপ করা তাঁহারা আমোদের মনে করেন। তাঁহাদের কেহ কেহ বলেন যে, কোনো কবির সম্ভ্রান্ত পূজনীয় কবিতাকে অঙ্গহীন করিয়া, রঙ চং মাখাইয়া ভাঁড় সাজাইয়া,রাস্তায় দাঁড় করাইয়া, দশ জন অলস লঘুহৃদয় পথিকের দুই পাটি দাঁত বাহির করাইলে সে কবির পক্ষে অত্যন্ত শ্লাঘার বিষয়, ইহাতে ইংরাজ হৃদয়ের এক অংশের শোচনীয় অঙ্গহীনতা প্রকাশ পায়। আমাদের জাতীয় ভাব এরূপ নহে। যদি একজন বৃদ্ধ পূজনীয় ব্যক্তিকে অপদস্ত করিবার জন্য সভামধ্যে কেহ তাঁহার হৃদয়-নিঃসৃত কথাগুলি বিকৃত স্বরে উচ্চারণ করিয়া মুখভঙ্গি করিতে থাকে, তবে তাহাকে দেখিয়া রসিক পুরুষ মনে করিয়া যাহারা হাসে তাহাদের ধোবা নাপিত বন্ধ করিয়া দেওয়া উচিত।

 টেনিসনের De Profundis কবিতাটি যে সমাদৃত হয় নাই তাহার একটা কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত গভীর, গুরুতর। আর একটা কারণ, ইহাতে এমন কতকগুলি ভাব আছে যাহা সাধারণত ইংরাজেরা বুঝিতে পারেন না, আমরাই সে-সকল ভাব যথার্থ বুঝিবার উপযুক্ত। ইংরাজিবাগীশ শিক্ষিত বাঙালীদের অনেকে ইংরাজি কাব্য দিশী ভাবে সমালোচনা করিতে ভয় পান। তাঁহারা বলেন, যদি ইংরাজ সমালোচকদের উক্তির সহিত দৈবাৎ অমিল হইয়া যায়! না হয় তাহা হইল। ইংরাজ সমালোচকের কথা ইংরাজী হিসাবে যেরূপ সত্য, আমাদের দেশীয় সমালোচকের কথা আমাদের দেশী