পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮০
সমালোচনা।

না, চিরকালই “Thou wilt help us to be” অপূর্ণতা হইতে পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হইবার আনন্দ আমরা চিরকাল ভোগ করিব। তোমার জয় হউক। মর্ত জীবনেও এই ক্রমোন্নতির তুলনা মিলে। মনুষ্য প্রথমে এক মহা বাষ্পরাশির মধ্যে, সমস্ত জগতের আদিভূতের মধ্যে মিলিয়া ছিল। ক্রমে ক্রমে অল্পে অল্পে পৃথক্‌ হইয়া মনুষ্যরূপে জন্মগ্রহণ করিল। অবশেষে যতই সে বড়ো হইতে লাগিল, অভিজ্ঞতা লাভ করিতে লাগিল, ততই তাহার ব্যক্তিত্ব জন্মিতে লাগিল। এই ক্রম অনুসারেই কবি ঈশ্বরকে প্রথমে অনন্ত ভাব, পরে অপরিমেয় সত্য ও তৎপরে অপরিসীম পুরুষ বলিয়াছেন। এইখানে কবিতা শেষ হইল। ইহার পরে আর কোথায় যাইবে? ইহাই চূড়ান্ত সীমা! যাঁহারা একটা দৈত্যকে পর্বত বলিলে, দৈত্যের যষ্টিকে শালবৃক্ষ কহিলে মহান্‌ভাবে হাঁ করিয়া থাকেন, তাঁহারা যে এত বড় কবিতার মহান্‌ ভাব উপলব্ধি করিতে পারেন না ইহাই আশ্চর্য। বস্তুগত মহান্‌ ভাব পর্যন্তই বোধ করি তাঁহাদের কল্পনার সীমা, বস্তুর অতীত মহান্‌ ভাব তাঁহারা আয়ত্ত করিতে পারেন না। তাহা যদি পারিতেন তবে তাঁহারা এই ক্ষুদ্র কবিতাটিকে সমস্ত ‘Paradise Lost’ এর অপেক্ষা মহান্‌ বলিয়া বিবেচনা করিতেন।