পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ ‘সমুদ্দুর বুঝি দক্ষিণদিকে বাবা ?” “চান্দিকেই সমুদুর আছে। দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর—আমাদের খুব কাছে।” ঠিক। ম্যাপে তাই আঁকা আছে। কিন্তু চারিদিকে সমুদ্র ? উত্তর দিকে তো হিমালয় পৰ্ব্বত, তারপর তিববত আর চীন ! ম্যাপট আবার ভাল করিয়া দেখিতে হইবে। “আমায় সমুদ্দুর দেখাবে বাবা ?” বাবা অনেকবার প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন, এবারও দিলেন। সমুদ্র দেখানোর আর হাঙ্গামা কি ? একবার তীর্থ করিতে পুৱীধামে গেলেই হইল, সুবিধামত একবার বোধ হয় যাইতেও হইবে । নীলার মা’র অনেক দিনের সাধ । কিন্তু কেরাণীর স্ত্রীর সহজ। সাধও কি সহজে মিটিতে চায় ! অনেক কষ্টে একরকম মরিয়া হইয়া একটা বিশেষ উপলক্ষে স্ত্রীর সাধটা যদি বা মেটানো চলে, ছেলেমেয়ের সাধ অপূর্ণই থাকিয়া যায়। রথের সময়ে যে ভীড়টাই হয়। পুরীতে, ছেলেমেয়েদের কি সঙ্গে নেওয়া চলে ? তাছাড়া, সকলকে সঙ্গে নিলে টাকাতেও কুলায় না। একজনকে নিলে অন্য সকলেই বা কি দোষ করিল ? নীলা সঙ্গে গেলে ছোট ভাই-বোনদের দেখাশোনাই বা করিবে কে ? নীলাকে সঙ্গে না নেওয়ার আরও কারণ আছে। “ন গো, বিয়ের যুগ্য মেয়ে নিয়ে ওই হট্টগোলের মধ্যে যাবার ভরসা আমার নেই।” বিয়ের যুগ্য মেয়ে কিন্তু বিয়ের অযুগ্য অবুঝ মেয়ের মত কঁাদিয়া কঁদিয়া চােখ ফুলাইয়া ফেলিল। কয়েকদিন চােখের জলের নােন্নতা স্বাদ ছাড়া জিভ যেন তার ভুলিয়া গেল অন্য কিছুর স্বাদ । মা-বাবা তীর্থ ܓ