পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক পকেট হইতে পুরাণে একটা চামড়ার মনিব্যাগ বাহির করিয়া কতকগুলি ভাজ করা নোট হইতে একটি সন্তৰ্পণে খুলিয়া ঘনশ্যামের হাতে দিল। কিছু আবেগ ও কিছু অনির্দিষ্ট উত্তেজনায় সে নার্ভাস হইয়া পড়িয়াছে। তার স্ত্রীর বালা বিক্রীর টাকা, মরণাপন্ন ছেলেব চিকিৎসার টাকা। আবেগ ও উত্তেজনায় একটু কাবু হইয়া ঝোকের মাথায় না দিলে একেবারে দশটা টাকা বন্ধুকে সে দিতেষ্ট বা পরিবে: কেন । ‘গোলাম ভাই। বসবার সময় নেই। একেবারে ডাক্তারবাবুকে নিয়ে যাব ।” একটু অতিরিক্ত ব্যস্তভাবেই সে চলিয়া গেল। নিজের উদারতায় লজ্জা পাইয়া বোধ হয় অস্বস্তি বোধ করিতেছিল । দু’মিনিটের মধ্যে আরও বেশী ব্যস্তভাবে সে ফিরিয়া আসিল । আতঙ্কে ধরা গলায় বলিল, “ব্যাগটা ফেলে গেছি।” “এখানে ? পকেটে রাখলি যে ?”

  • পকেটে রাখবার সময় বোধ হয় পড়ে গেছে।”

তাই যদি হয়, তক্তপোষে পড়িয়া থাকার কথা । ঘনশ্যামকে টাকা দিয়া পকেটে ব্যাগ রাখিবার সময় শ্ৰীনিবাস বসিয়া ছিল । ঘর এত বেশী অন্ধকার নয় যে, চামড়ার একটা মনিব্যাগ চোখে পড়িবেন না । তবে তক্তপোষের নীচে বেশ অন্ধকার । আলো জালিয়া তক্তপোষের নীচে আয়নায় প্ৰতিফলিত আলো ফেলিয়া খোজা হইল। মেঝেতে চোখ বুলাইয়া কতবার যে শ্ৰীনিবাস সমস্ত ঘরে পাক খাইয়া বেড়াইল। ঘনশ্যামের সঙ্গে তিনবার পথে নামিয়া দু’টি বাড়ির পরে পান বিড়ির দোকানের সামনে পৰ্যন্ত খুঁজিয়া আসিল । তারপর তক্তপোষে বসিয়া পড়িয়া মরার মত বলিল, Sod