পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক “পারিবি ? বঁাচা গেল। আমি তাই ভাবছিলাম। সস্তুর মার চিকিৎসা না করলেও তো চলবে না।” শ্ৰীনিবাস চলিয়া যাওয়ার খানিক পরেই হঠাৎ বিনা ভূমিকায় ঘনশ্যামের সর্বাঙ্গে একবার শিহরণ বহিয়া গেল। ঝাকুনি লাগার মত জোরে। শ্ৰীনিবাস যদি কোন কারণে গা ঘোঁসিয়া আসিত, কোন রকমে যদি পেটের কাছে তার কোন অঙ্গ ঠেকিয়া যাইত । তাড়াতাড়িতে সাটের নীচে কেঁচার সঙ্গে ব্যাগটা বেশী গুজিয়া দিয়াছিল, শ্ৰীনিবাসের সঙ্গে এদিক ওদিক ঘুরিয়া খোজার সময় আলগা হইয়া যদি ব্যাগটা পড়িয়া যাইত ! পেট ফুলাইয়া ব্যাগটা শক্ত করিয়া আটকাইতেও তার সাহস হইতেছিল না, বেশী উচু হইয়া উঠিলে যদি চােখে পড়ে। অশ্বিনীর সোণার ঘড়ি আলগাভাবে সার্টের পকেটে ফেলিয়া রাখিয়া কতক্ষণ ধরিয়া চা খাইয়াছে, লোকের সঙ্গে আলাপ করিয়াছে, অশ্বিনীর সঙ্গে দেখা করিয়াছে, কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর আতঙ্ক তো একবারও হয় নাই। সেখানেই ভয় ছিল বেশী। তার ব্যাগ লুকানোকে শ্ৰীনিবাস নিছক তামাসা ছাড়া আর কিছু মনে করিত না। এখনো যদি ব্যাগ বাহির করিয়া দেয়, শ্ৰীনিবাস তাই মনে করিবে। তাকে চুরি করিতে দেখিলেও শ্ৰীনিবাস বিশ্বাস করিবে না। সে চুরি করিতে পারে। কিন্তু কোনরকমে তার পকেটে ঘড়িটার অস্তিত্ব টের পাইলে আশ্বিনী তো ওরকম কিছু মনে করিত না। সোজাসুজি বিনা দ্বিধায় তাকে চোরা ভাবিয়া বসিত । ভাবিলে এখন তার আতঙ্ক হয় । সেখানে কি নিশ্চিন্ত হইয়াই ছিল! ঘড়ির ভারে ঝুলিয়া পড়িয়াছিল পাতলা সার্টের পকেটা । তখন সে খেয়ালও করে নাই। অশ্বিনী যদি জিজ্ঞাসা করিয়া বাসিত, তোমার পকেটে কি ঘনশ্যাম । ঘরের স্যাতসেঁতে শৈত্যে ঘনশ্যামের অন্য সব দুশ্চিন্তা টানিকরা So