পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্র্যাজেডির পর অধ্য অন্যমনস্কতার আড়ালে চুপি চুপি দৃশ্য আর শব্দের অসংখ্য উপচারে জগত তার মনের সমস্ত ফাক ভরিয়া রাখিত, আজ তাকে একেবারে ত্যাগ করিয়াছে। নিজের ঘরের নির্জনতায়, বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের মধ্যে, বাড়ির বাহিরে মানুষের জীবনস্রোতে, প্ৰান্তর ও নদীতীরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেখানেই সে থাক, ভিতরের শূন্যতা শুধু তাকে পীড়ন করে। ঘুম আসিতে মাঝরাত্রি পার হইয়া যায়, ঘুম ভাঙ্গিতে বেলা হয়। অনেক । বাড়ীর পিছনের প্রকাণ্ড দীঘিতে শামুকের খোজে গভীর জলে তলাইয়া গেলে যেমন খুব ভারি একটা স্তব্ধতা দম আটকাইয়া দিতেছে মনে হইত, তেমনি একটা চাপের মতই চেতনা যেন এক মুহুর্তে চারিদিক হইতে তাকে চাপিয়া ধরে। জোরে জোরে কয়েকবার শ্বাস টানিতে হয়। সেই সময় কয়েক মুহুর্তের জন্য দুঃখ যেন দেহের কষ্টে পরিণত হয়। ঘুম ভাঙ্গিবার কথা ভাবিয়া ঘুমানোর আগে তার ভয় করে । তারপর ভোতা, অবসন্ন, বিষাদময় জাগরণের জের টানিয়া চলা । গ্রীষ্মের দিনে গুমোটের গরমে মেসের ঘরে নোংরা চাদরে শুইয়া ঘামে ভিজিতে ভিজিতে বিমানোর মত জীবনকে কদৰ্য মনে করিয়া হয়তো সকালটা কাটিয়া গেল। কলেজ কামাই করা দুপুরের শেষে একজনের সঙ্গে দেখা হওয়ার ব্যর্থ সম্ভাবনার জালাভেরা ক্ষুব্ধ বৈরাগ্যের ঝােঝ হয়তো শুধু পরিবেশন করিয়া গেল সারা দুপুরটি। অথবা হয়তো এক অনির্বচনীয় ব্যাকুলতা, ঘুমন্ত সহরের একটি মেসের ছাতে বিছানো মাদুরে শুইয়া জ্যোৎ মা আর তারা ভরা আকাশে নিজেকে ছড়াইয়া দিবার নির্বোধি অবাধ্য কামনার অতি শান্ত, অতি রহস্যময়, অতি অসহ্য ব্যাকুলতা সকাল হইতে মনকে দখল করিয়া ब्रश्व्गि । Y y (