পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্র্যাজেডির পর এদের ইচ্ছাকৃত নয়। বাড়ীতে এতবড় একটা ব্যাপার। চলিতেছে, বাড়ীতে যে আছে সে কিছু টের পাইবে না, তাকে ডাকিয়া জানাইয়া দিতে হইবে, একথা কেউ কল্পনাও করে নাই। সকলে ভাবিয়াছে, সে জানিয়াও উদাসীন হইয়া আছে, সংসারের দৈনন্দিন ছোট ছোট বিষয়ের মত এই বড় বিষয়টি নিয়াও সে এক মুহুর্তের জন্য মাথা ঘামাইতে চায় না। বাড়ির সকলকে সে কি এতদিন সত্যই এমনভাবে অবহেলা করিয়াছে ? মিহির একটু লজ্জা বোধ করিতে থাকে। উবু হইয়া বসিয়া সে বলে, “সামান্য পঞ্চাশ ষাট টাকার ব্যাপার তো, ও নিয়ে আর গোলমাল করে কাজ নাই।” কেবল মাসী একটু বিস্ময়ের সঙ্গে তার দিকে তাকায় আর সংক্ষেপে বলে, “কেবল টাকার জন্য নয়।” আর কিছু বলার প্রয়োজন কেউ বোধ করে না। আর কেউ তার দিকে তাকায় না । পিসীর ছেলে সুধীর কুড়ি টাকায় এখানকার কাপড়ের মিলে এপ্ৰেণ্টিসের কাজ আরম্ভ করিয়াছে, মিহিরের চেয়ে সে তিন বছরের ছোট । সে গম্ভীর মুখে বলিতে আরম্ভ করে, “আমি বলি কি-” সকলে মন দিয়া তার কথা শোনে । মিহির চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। এইসব অতিপরিচিত মা-বাবা, ভাই-বোন, মাসী-পিসীদের হঠাৎ তার এক ভিন্ন জগতের মানুষ মনে হয় । সে যেন কোনদিন এদের দলে ছিল না, এদের সঙ্গে তার কোন যোগ নাই। কোন মিল নাই। এতকাল খেয়াল ছিল না, ক’মাস নিজেকে নিয়া থাকিয়া আজ প্ৰথম এদের দিকে ভাল করিয়া চাহিতে গিয়াই টের পাইয়াছে। এদের অনুভূতি অন্য সুরে বাধা, সুখ-দুঃখের রূপ অন্যরকম। যে দুঃখ তাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছে সে দুঃখ অনুভব করার ক্ষমতাও এদের নাই। এরা হিসাবী, সংযত, ধৈর্যশীল, এদের SSዓ