পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ নাই, বিছানা তোলা, মসলা বাটা, রান্না করা লইয়া দিন কাটায় নাই, এমন ভয়ানক ভয়ানক খারাপ কথার বকুনি শোনে নাই। হায়, একটা ভাল জিনিব পৰ্য্যন্ত সে যে খাইতে পায় না, এমনিতেই তার শরীরের নাকি এমন পুষ্টি হইয়াছে কোন ভদ্রঘরের মেয়ের যা হয় না, হওয়া উচিত নয় । কিন্তু তার না হয় অভদ্ররকমের দেহের পুষ্টি হইয়াছে, তার ভাইবোনেরা তো রোগ, মামাতো ভাইবোনদের সঙ্গে ওরাও একটু দুধ পায় না কেন, পিঠা-পায়সের ভাগটা ওদের এত কম তয় কেন ? এমন ভিখারীর ছেলের মত বেশ করিয়া তার ভাই দু’টিকে স্কুলে যাইতে হয় কেন ? মামাদের জন্য ভাইরা নে তার দু’বেলা খাইতে পাইতেছে, স্কুলে পড়িতে পাইতেছে, এটা নীলার খেয়ালও থাকে না, মামাতো ভাইবোনদের সঙ্গে নিজের ভাইবোনদেল আহারবিহারের স্বাভাবিক পার্থক্যটা তাকে কেবলি কঁদোয় । বড় মামী বলেন, “বড় তো ছিচৰ্কাদুনে মেয়ে তোমার ঠাকুরবি ?” মেজমামী বলেন, “আব্দর দিয়ে দিয়ে মেয়ের মাথাটি খেয়েছ একেবারে ” নীলার মা বলেন, “দাও না তোমরা ওর একটা গতি করে, মেয়ে যে দিন দিন কেমনতরো হয়ে যাচ্ছে ?” পাত্ৰ খোজা হইতে থাকে। আর নীলা ভাবিতে থাকে, বিবাহ হইয়া গেলে সে কি আবার সহরের সেই বাড়ীর মত একটা বাড়ীতে গিয়া থাকিতে পাইবে, সকলের আদর-যত্ন জুটিবে, অবসর সময়ে বলাইদের মত কোন প্রতিবেশীর তিনতলা ছাতে উঠিয়া চারিদিকে বাড়ীর সমুদ্ৰ দেখিতে পাইবে, বলাই-এর মত কারও কাছে সমুদ্রের গল্প শোনা চলিবে ? ইতিমধ্যে ম্যালেরিয়ায় ভুগিতে ভুগিতে নীলার একটি ভাই মারিয়া গেল । নীলার মা কি একটা অজানা অসুখে وا