পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ অভাব, স্বামীহীন সধবা-জীবনের অসঙ্গতি, অপমান ও দুৰ্গতি। স্বামীর সঙ্গে গৃহত্যাগ করে নাই বলিয়া তখন তার আপশোষের সীমা থাকে নাই, স্বামীকে চাহিয়া উদ্দাম কামনা তাহার হৃদয়মনে মাথা কুটিয়া মরিয়াছে। আজও সে মাঝে মাঝে কল্পনা করে গোপাল হয়তো ফিরিয়া আসিবে। ছেলেমানুষ বৌ তার যে আহবানের কোন অর্থই বুঝিতে পারে নাই, একটিবার ফিরিয়া আসিয়া আবার সেই আহবান তাকে সে জানাইবে। বুড়ে গুরুদেবের আশীর্বাদের ফল তাব জীবনে এভাবে ফলিয়াছে দেখিয়া ছোটবৌ-এর বেলা তার শিষ্যের আগমন তাই সুমতিকে কিছুমাত্ৰ ক্ষুঃ করে নাই। বুড়োর ভয়ঙ্কর আশীর্বাদে কাজ নাই ছোট বৌ-এর । কৃষ্ণপাদানন্দের চেহারা দেখিয়া পাড়াশুদ্ধ মেয়ে-পুরুষ অবাক হইয়া চাহিয়া রহিল। গেরুয়া লুঙ্গি পর, গেরুয়া পাঞ্জাবী গায়ে, খড়ম পারে দিয়া এ যেন রাজা বা দেবতার আবির্ভাব-ছদ্মবেশী গোপালের আগমন । গোপালেরও এরকম দীর্ঘ বলিষ্ঠ অপূর্ব চেহারা ছিল। কিন্তু না, এ গোপাল নয়। দেখিলে গোপালকে মনে করাইয়া দেয়, কিন্তু গোপালের সঙ্গে এর কোন মিল নাই। সে কথা ভাবাই মিছে ৷ সুমতি তাকে প্ৰণাম করিল। সকলের শেষে। কাঠ হইয়া দাড়াইয়া এতক্ষণ সে কৃষ্ণপদানন্দকে দেখিতেছিল এবং কৃষ্ণপদানন্দ বার বার তার দিকে তাকাইতেই সর্বাঙ্গে তার শিহরণ বহিয়া যাইতে ছিল। না, এ গোপাল নয়। সুমতি অন্য সকলের মত গোপালের সঙ্গে অমিল খোজার বদলে খুজিতেছিল মিল। না, গোপালের সঙ্গে সাধুর মিল নাই। প্ৰণাম করার সময় একটা অনিবাৰ্য্য প্রমাণও সে \Sy